জমির ভুয়া কাগজে ঘুষের বিনিময়ে অসংখ্য ঋণ
বুধবার ১৯ জানুয়ারী ২০২২ ১৫:৫৫
লিমন মিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কৃষি ব্যাংক থেকে জমির ভুয়া কাগজ দিয়ে ঋণ পাচ্ছে মাঠে এক শতক জমিতে চাষ না থাকা ব্যক্তিরা অথচ প্রকৃত কৃষকদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ঋণ না দেওয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক। অভিযোগে জানাগেছে, দালাল সিন্ডিকেটের তদবির ছাড়া ঋণ হয় না ঝিনাইদহ শাখার কৃষি ব্যাংক থেকে।
প্রতি লাখে দালাল ও ব্যাংকের আইও ১০-১৫ হাজার টাকা কমিশন নিয়ে থাকেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ও গান্না ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করেন এহিয়া নামের এক কর্মকর্তা। মাঠে এক শতক জমি না থাকলেও তার দালালের মাধ্যমে গান্না এলাকায় প্রায় ১০-১২ জনকে ঋণ দিয়েছেন কারও বা রিকভার করে ঋণের অংক বাড়িয়েছেন। কিন্তু বেতাই গ্রামের মৃত কাঠি মালিথার ছেলে নুরুল ইসলামের মাঠে ১৫ বিঘা কৃষি জমি থাকলেও তার ঋণের অংক বাড়ায়নি। উল্টো তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে রিকভার করেছেন। জানাগেছে, এহিয়া তার বিশ্বস্ত লোকদের মাধ্যমে শহরে ঋণ রিকভার করার ব্যবসা শুরু করেছেন।
আগে কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া আছে এমন কারও জরুরী আবার ঋণের প্রয়োজন হলে ১-৩ দিনের জন্য টাকা ধার দেয় কমিশনের মাধ্যমে। এদিকে জমি না থাকলেও উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস থেকে জমির ভুয়া দলিল,পড়চা,দাখিলা বানিয়ে ঋণ বিতরণ করছেন সরজমিন তদন্ত না করেও।
গান্না ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গান্না ইউনিয়নের চান্দেরপোল গ্রামের রফিকুল ইসলাম পিতা মৃত হারেজ আলীর ভিটা বাড়ি ও কবরস্থানের নামে মোট ৮৬ শতক জমি রয়েছে চান্দেরপোল মৌজায় এবং পোড়া বেতাই গ্রামের তারেক পিতা মৃত আইনুদ্দিনের নিজ নামে কোন জমি নেই। তার পিতা আইনুদ্দিনের নামে ৪০ শতক জমি রয়েছে পোড়াবেতাই মৌজায়। কিন্তু এই দুজনের এক শতক জমিরও চাষ নেই। অথচ তাদের দুই জন কৃষি ব্যাংক থেকে আড়াই ও দুই লাখ করে ঋণ পেয়েছেন। এদিকে তারেকরা ৪ ভাই হওয়ায় ৪০ শতক জমির মাত্র ১০ শতক জমির ওয়ারিস সে।
এই বিষয়ে ব্যাংকের আইও এহিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা জমির কাগজ জমা দিয়েই ঋণ নিয়েছে।
সরজমিনে তদন্ত করেছেন তাদের জমি আছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি কি কারণে সরজমিনে তদন্ত করতে যাবো। আপনি আমার ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামের আঃ হান্নান নামের একজন কৃষি ব্যাংকের দালালি করছেন। এর আগে দুর্গাপুর গ্রামের সামসুল নামের একজন এই কাজ করতো। হান্নানের মাধ্যমে গান্না এলাকায় প্রায় ১৫ জনকে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে যাদের মাঠে এক শতক জমিতেও চাষ নেই।
এর আগে প্রায় ২২ জনকে জমির ভুয়া কাগজপত্রে ঋণ দেওয়া হয়েছে এমন নিউজ প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদ পত্রে। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের সত্যতা থাকলেও কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ গ্রহিতাদের দিয়ে সংবাদের প্রতিবাদ দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা চালায়।
এমএসি/আরএইচ