কচুয়ায় প্রেমিকার বাড়ির সামনে প্রেমিকের আত্মহত্যা 

সোমবার ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:২৬


:: কচুয়া (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ::
বাগেরহাটের কচুয়ায় বাগেরহাট সদরের বাড়ুইপাড়া ইউনিয়নের রাজিব শেখ(১৯) নামের একটি ছেলের রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রাত ১০ টা থেকে ১৬ অক্টোবর ভোর ৫ টার মধ্যে যে কোন এক সময় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
১৬ অক্টোবর ভোরে কচুয়া উপজেলার গিমটাকাঠি গ্রামের আয়না বেগমের ঘরের সামনে পিচের রাস্তার পাশে জিএল (কচা) গাছে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাজিব শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের শাহেবাহার গ্রামের সাইফুল শেখের ছেলে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, নিহত রাজিব শেখ কচুয়া উপজেলার গিমটাকাঠি গ্রামের আয়না বেগমের মেয়ে রুমি আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ১৫ অক্টোবর বেলা ২ টার দিকে নিহত যুবক প্রেমিকা রুমির সাথে দেখা করতে কচুয়া আসে। এসময় রুমি আক্তারের পরিবারের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সূত্র ধরেই ঐ যুবক  আত্মহত্যা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্র মাধ্যমে জানা যায়, ১৫ অক্টোবর রুমির সাথে নিহত রাজিব দেখা করতে আসলে রুমির আসেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে রাজিবকে মারধর করে এলাকা থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে পরদিন সকালে রুমির বসত ঘরের সামনে পিচের রাস্তার পাশে জিএল (কচা) গাছের ডালের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানার নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রুমি আক্তার বলেন,ফেসবুকের মাধ্যমে ছেলেটির সাথে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কয়েক মাস আগে জানতে পারি তার একটি টিউমার আছে তাই পরবর্তীতে সাথে সম্পর্ক করতে অস্বীকার করি। এরপর থেকেই সে আমাকে নানা ভাবে বিরক্ত করে আসছিল। তবে কেন সে আত্মহত্যা করেছে এ বিষয়ে জানা নেই।
রুমি আক্তারের মা আয়না বেগম বলেন,আমার মেয়েকে ছেলেটি ৩/৪ মাস আগে বিয়ে করতে চেয়েছিল কিন্তু মেয়ের বিয়ের বয়স না হওয়ার সহ নানা কারনে আমরা রাজি না হওয়ার স্থানীয় ভাবে বসে বিষয়টি মিমাংসা করি। হটাৎ আজ সকালে ছেলেটি আমার ঘরের সামনে কেন আত্মহত্যা করেছে এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই।
নিহতের চাচা সিঙ্গাপুর প্রবাসী আসাদুজ্জামান শেখ মুঠো ফোনে বলেন, মেয়েটির সাথে আমার ভাইপোর অনেকদিন থেকে সম্পর্ক ছিল। যতদুর জানি মেয়েটির আমাদের গ্রামের বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। শুনেছি গতকাল ওখানে আমার ভাইপোকে মারধর করা হয়েছে। তাই আমাদের সন্দেহ তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নিহতের বড়ভাই সজিব শেখ বলেন,আমার ভাইকে গত দুই দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছিল না এবং মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। আজ সকালে শুনি আত্মহত্যা করেছে কিন্তু আমরা ধারণা করছি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সঠিক বিচার চাই।
এ ঘটনায় কচুয়া থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন। ময়না তদন্তেরর রিপোর্ট শেষে এ ঘটনার সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

এমএসি/আরএইচ