১৯ বছরের আবেগ আর ৩৯ বছরের আবেগ এক নয়

শনিবার ১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৩:১৫


বয়স বাড়লে চেহারায় পরিবর্তন আসে। ত্বকে, চোখে, চিবুকে, বলিরেখায় স্পষ্ট ছাপ দেখা যায়। রাস্তায় অপরিচিত কেউ একসময় ভাইয়া/আপু ডাকে। সেখান থেকে আংকেল/আন্টি। বয়সের এই প্রভাব উপেক্ষা করা যায়না। পেছনে ফেরার উপায় নেই। যেহেতু জীবন ওয়ান ওয়ে রোড তাই সামনে চলতে হয়। মৃত্যুই গন্তব্য। গন্তব্যে পৌঁছার পথের জার্নিতে কে কিরকম সাজবে এটা তার উপর নির্ভর করে। 
বয়সের প্রভাব শরীরের পাশাপাশি মনোজগতে পড়ে। এটা দেখা যায়না বলে মানুষ নিজেও খুব একটা উপলব্ধি করেনা। ১৯ বছরের আবেগ আর ৩৯ বছরের আবেগ এক নয়। তেমনি তফাৎ ৪৯ এর চিন্তাভাবনায়। 
বয়সের এই সময়ে এসে টের পাচ্ছি অনেকটাই বদলে গেছি। কিছু চিন্তা আগে একরকম এখন তার পুরো বিপরীত এমনও হয়। কেউ অসম্মান করছে, প্রতারণা করছে আগে মেনে নেয়াটা অসম্ভব ছিলো এখন তা মেনে নেই অবলীলায়। জানি, এরা আমার কেউ নয়।  সম্পর্কে ইগোকে স্থান দেইনা। এই না বলায় জটিলতা বাড়ায়। 
কেউ ছেড়ে যেতে চাইছে? যেতে দেই। একদিন তো পৃথিবীটাইকে ছেড়ে যেতে হবে, একটু আগেভাগেই নাহয় একজনের থেকে বিদায় নিলাম এইতো! কারো ইচ্ছের বিরুদ্ধে আঁকড়ে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে রাখতে গেলে নিজের হাতটাই রক্তাক্ত হবে শুধু। 
তেমনি কেউ কাছে ঘেঁষতে চাইলেও দূরে রাখি। নতুন মানুষ নতুন ইস্যু। সম্পর্কের কিছু দায় থাকে, থাকে কিছু বাধ্যবাধকতা। মানুষ মুলতঃ এমন এক স্বাধীন প্রানি যে কিনা পরাধীনতা পছন্দ করে। যে স্বাধীনতার সাধ পায় তার বাধ্যবাধকতায় হাসফাস লাগে। নিজের সত্ত্বাকে পরিপূর্ণ খুঁজে পায় প্রকৃতির মাঝে কিংবা নিজেকে ছড়িয়ে দিতে চায় প্রকৃতির মাঝে। এ যেন নিজেই নিজের ঈশ্বর হয়ে উঠার সাধনা। 
আসলে এই উপলব্ধির ব্যাপারগুলো ভিন্ন। অল্পবয়স্ক কেউ যখন নিজের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে খুব কনফিডেন্ট থাকে, নিজেকে অনেক ম্যাচিউর ভাবে, বয়স্কদের সম্পর্কে আজেবাজে বলে, মনে মনে বলি, আহা! বাছা! এত তারাহুরো কিসের? যাক না কয়েকটা বছর, নিজেই টের পাবেন কতবড় বোকা ছিলা।
 
শাহরিয়া দিনা, ঢাকা। 

এমএসি/আরএইচ