হবিগঞ্জে জমজমাট ঈদ বাজার, মার্কেটে উপচে পড়া ভিড়

সোমবার ২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৬:২৬


হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
আর মাত্র সপ্তাহখানেক অপেক্ষায়, আসছে ঈদুল ফিতর। আর ঈদ মানেই নতুন জামা, নতুন পোশাক। নতুন পোশাক ছাড়া ঈদ আনন্দ যেন একেবারেই অসম্ভব। তাই তো হবিগঞ্জ জেলা সদরে দোকানিরা নতুন পোশাকে সাজিয়ে তুলছেন দোকানসহ শপিং মহলে।

সেজন্যই জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঈদের জামা কাপড় কিনতে শহরে কাপড়ের দোকানে আসছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। ক্রেতাদের আগমনে জেলা সদরে এখন স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বেশি ভিড়। সে সুবাদে হবিগঞ্জে এখনই ছড়িয়ে পড়েছে ঈদ আনন্দ। এবারের জমজমাট বেচাকেনায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।

গতবারের চেয়ে ঈদের কালেকশন তুলনামূলকভাবে ভাল হলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। কাপড় ও জুতার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন সকাল থেকে বিকালের মধ্যেই কাপড় কিনে নিয়ে যান নিজ নিজ এলাকায়।

শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রিপিস, ওড়না, বোরকা, গজ কাপড়সহ কোনো কিছুরই কমতি নেই দোকানগুলোতে। এবার বাচ্চাদের ও নারীদের পোশাকে বৈচিত্র্য এসেছে বেশ। তীব্র গরম উপেক্ষা করে দুই বছর পর ঈদ মার্কেট জমজমাট হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জ।

জেলা শহরের পৌর শহরের শাড়ির দোকান ও থ্রি-পিচের দোকানসহ প্রতিটি মার্কেট ও ফুটপাতগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ বিক্রেতারা নানা অজুহাত দিয়ে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

সোমবার হবিগঞ্জের ঘাটিয়া বাজার এসডি স্টোর, এসডি প্লাজা, এমবি প্লাজা, মধুমিতা ও খাজা গার্ডেন সিটি, আশরাফ জাহান ও শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাটসহ কয়েকটি মার্কেট ও ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের পদচারনায় মুখরিত দোকানগুলো।

প্রতিটি মার্কেটের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তাছাড়া বিভিন্ন শপিংমলে চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে ঈদের পোশাক। তবে ছিট কাপড়ের দাম গজে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেশি দাম ধরলেও ক্রেতারা কিনতে পারছেন।

এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ দাউদনগর, বাহুবল ও মিরপুর, চুনারুঘাট ও আসামপাড়াও চলছে জমজমাট বেচাকেনা। বেচাকেনায় ব্যতিব্যস্ত ব্যবসায়ীদের দম ফেলার যেন ফুরসত নেই। ঈদের আনন্দের জন্য কেনা করতে আসা অনেক ক্রেতা অভিমত ব্যক্ত করেছেন, এবারের ঈদের কালেকশন তুলনা মূলকভাবে ভাল হলেও দাম আকাশ ছোয়া।

মার্কেট গুলোতে কাপড়ের পোশাকের দাম নেওয়া হচ্ছে গত বছরের তুলনায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার অধিক। পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে এবার চড়া দামে বেচাকেনা হচ্ছে। গত বছর যে পাঞ্জাবি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় ক্রেতারা কিনতে পেরেছে। এবার তার দাম হাকানো হয়েছে ৭০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা।

তাছাড়া শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের পোশাক ও শিশুদের পোশাকে দাম হাকানো হচ্ছে দ্বিগুণ। যে শাড়ি, থ্রিপিচ গত বছর বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। সেই শাড়ি কাপড় ও থ্রিপিস এবছর চাওয়া হচ্ছে এক হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা। কাপড়ের সাথে তালমিলিয়ে এবার ঈদের বাজারে জুতার দাম গত বছরের তুলনায় এক জোড়া জুতা, স্যান্ডেল ১০০ থেকে ৩০০ টাকার অধিক দাম হাকানো হয়েছে। জুতার দাম দেখে মনে হয় বছরের পুরো মাসের আয় এবার ঈদের কেনাকাটার মধ্যে পুসিয়ে নেবেন দোকান মালিকেরা।

জেলার শহরসহ উপজেলার বড় বাজার এলাকায় গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক মার্কেটগুলোকে চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে কাপড়, চোপড়, জুতা, স্যান্ডেল থেকে শুরু করে ঈদে ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রী।

মেসার্স আল নুর সিটির ম্যানাজার জানান, এই বছরের ঈদে ছেলেদের মধ্য পাঞ্চাবি এবং মহিলাদের টাঙ্গাইল শাড়ি ও বাচ্চাদের টপচ ক্রেতাদের চাহিদা বেশি।

এসডি ষ্টোর কর্মচারী অর্জুন রায় জানান, এই ঈদে সুতি টাঙ্গাইল শাড়ি, তাথের শাড়ি, সিল্ক শাড়ি থেকে অরগেঞ্জ ওকাঞ্জীবরন শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্য টাঙ্গাইল শাড়ি ১৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা কাঞ্জীবরন শাড়ি ১১ থেকে ১২ হাজার ও অরগেঞ্জা শাড়ি ৩-৫ হাজার টাকার মূল্য শাড়ির।

এসডি প্লাজা ম্যানাজার বিপুল রায় জানান, গত বছর থেকে এই ঈদে ক্রেতাদের আনাগুনা বেশি এবং আমাদের ব্যবসা গত বছরের তুলনায় ভালো কিন্তু ঈদের বাজারগুলোতে চোর, ছেচড়া, পকেটমারের উপদ্রব্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন চোর, ছেচড়া ও পকেটমারের কবলে পড়ে অনেক নারী-পুরুষ সর্বশান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছে। বাজারগুলোতে আইনশৃংখলা উপস্থিতি তেমন একটি চোখে পড়েনি।

এমএসি/আরএইচ