সৈয়দপুরে ৩৯ শিক্ষার্থী পেল মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ

শনিবার ৯ এপ্রিল ২০২২ ১১:২৩


নীলফামারী প্রতিনিধি ::
নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে  এ বছর ৩৯ শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ অর্জন করে জেলাবাসীকে চমকে দিয়েছে। দীর্ঘ করোনার দুঃসময়কে জয় করে এমন চমৎকার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও। এ কলেজের শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের সাফল্যে ভীষণ আনন্দিত। গত পাঁচ এপ্রিল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। একই কলেজের ৩৯ সহপাঠী মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় তাদেরকে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর এই কলেজ থেকে ২৬৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ২৪৯ জন জিপিএ-৫ পায়। আর মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন ৩৯ জন। তারা  ঢাকা মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, পাবনা মেডিকেল কলেজ, শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ,  সিলেট মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। 

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সৈয়দপুর শহরের কাজিপাড়ার  নুসরাত জাহান  বলেন, করোনাকালে কলেজ অনেকদিন বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে শিক্ষকরা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। নিয়মিত অনলাইন ক্লাস নিয়ে আমাদের সিলেবাস পূর্ণ করেছেন। আমাদের শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশটা ব্যতিক্রম। শিক্ষার্থী আদুরি তাসফিন ফারজানার বাড়ি  রানিরবন্দরে। 

বাবা সেই ছোটকালে মারা যান। আদুরি এ বছর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে। 

তিনি জানান, বাবার স্বপ্ন ছিল আমি একদিন ডাক্তার হবো। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তব রূপ নিতে চলছে। সাফল্যে প্রতিটি ধাপে শিক্ষকদের কঠোর শ্রম রয়েছে। পড়াশোনা শেষ করে আমি একজন মানবিক চিকিৎসক হতে চাই। অভিভাবক এস এম নুর ইসলাম বলেন, কলেজ থেকে আমাদের নানা রকম নির্দেশনা দেওয়া হতো। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের সন্তানরা ভাল ফলাফল করছে ও মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। কলেজটির  অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক বলেন, কলেজে পাঠদান চলে গ্রিন, ক্লিন, এনজয়েবল ক্লাসরুম লার্নিং পদ্ধতিতে। 

কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমরা একধরনের সেতুবন্ধন তৈরি করি। ক্লাস রুমেই সমপূর্ণ পাঠদান সমপন্ন করা হয়। এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় প্রয়োজনীয়তা মাথায় রাখা হয়। তবে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি কোনো চাপ রাখা হয় না। শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া আছে বলেই আমরা সফল হতে পেরেছি।

উল্লেখ্য নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অতীতে নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় (টেকনিক্যাল কলেজ)। ২০১৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নামকরন করে। কলেজটিতে কেবলমাত্র বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। ১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে তোলা হয়েছিল। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানেও গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। 

এমএসি/আরএইচ