শৈলকুপার গড়াই নদ ভাঙনে আতঙ্কে এলাকাবাসী

বুধবার ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৩১


:: এম বুরহান উদ্দীন, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ::
 
গড়াই নদের ভাঙনে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের অনেক বসতবাড়ি ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে আছে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো। নদগর্ভে সবকিছু হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। সাধারণত বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিলেও এবার শীত মৌসুমেও ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে নদের তীরে।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, চরম ঝুঁকিতে আছে হাকিমপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িসহ পূর্ব মাদলা, পশ্চিম মাদলা খুলুমবাড়িয়া, জালশুকা, নলখুলা, সুবির্দাহ গোবিন্দপুর, কাশিনাথপুর গ্রামের অসংখ্য বসতবাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার না হওয়ায় ফাটল ধরে তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও হুমকিতে পড়েছে এসব এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলি জমি। গড়াই নদের ভাঙনের কবলে পড়ে বদলে গেছে ইউনিয়নের চিত্র। ভিটেবাড়ি, জমিজমা ও সহায়-সম্বল হারিয়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছেন ওপারে জেগে ওঠা চরে কেউবা অন্যত্র চলে গেছেন।
 
পূর্ব মাদলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গণি বলেন, ‘গড়াই নদের তীব্র ভাঙনে এলাকার অনেক বাড়িসহ ফসলি জমি যেকোনো সময় বিলীন হতে পারে। আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। অতি সত্বর নদী ভাঙন রুখতে না পারলে বিলীন হয়ে যাবে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরসহ ভিটে-মাটি এবং ফসলি জমি।’
 
সহায় সম্বল হারানো পশ্চিম মাদলা খুলুমবাড়িয়া গ্রামের হাসিনা বেগম বলেন, ‘নদগর্ভে সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব। পরিবারের সবাই চলে গেলেও আমি স্বামীর ভিটা আঁকড়ে ধরে আছি। বর্তমানে খুব কষ্টে দিন পার করছি। আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।’
 
হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকু বলেন, ‘খুলুমবাড়ি থেকে কাশিনাথপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে নদে মিশে গেছে। বর্তমান অনেক বসতভিটাসহ ঝুঁকিতে রয়েছে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো। অতি দ্রুত সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।’
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাননি। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
 
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তথ্য পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
 

এমএসি/আরএইচ