মৌলভীবাজারে পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে ভীড় জমিয়েছে পর্যটকরা

রবিবার ২২ আগস্ট ২০২১ ২৩:১০


:: তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি ::
 
 
করোনাভাইরাসের উধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেকসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
 
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে লাউয়াছড়াসহ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) দুপুর থেকে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান খুলে দেওয়ার পর থেকে সবুজ এ বন পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। শুধু লাউয়াছড়াই নয় পর্যটকরা সেখান থেকে যাচ্ছেন মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, চা-বাগানসহ কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বদ্ধ ভূমি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
 
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে এ উদ্যান। ছোট বড় প্রায় সব বয়সী পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। শুক্রবার ও শনিবার সরকারি বন্ধ থাকায় পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
 
মাস্ক ছাড়া উদ্যানের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না পর্যটকদের। কিন্তু প্রবেশদ্বার অতিক্রম করার পর অধিকাংশ পর্যটকের পড়নে মাস্ক পাওয়া যায় না। ছবি তোলা কিংবা অক্সিজেন গ্রহণের জন্য অধিকাংশ পর্যটকই মাস্ক রাখছেন না মুখে। তবে পর্যটকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদ্যানে চলাচল করেন সে জন্য কাজ করছে লাউয়াছড়া উদ্যানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পর্যটন পুলিশ ও বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট লোকজন।
 
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান খোলার খবর পেয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে ঘুরতে আসা মাজহারুল কয়েস, ফাহমীদা নওশীন, নেত্রকোণা থেকে আসা শাহ দিলদার মামুন, সিলেট থেকে আসা শ্রাবন্তী চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার পর প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর জন্য এসেছি। সবুজ এ বন ঘুরে সত্যিই ভালো লেগেছে।
 
কমলগঞ্জের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ আজাদ মান্না বলেন, করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা এখানে ভ্রমণ করলে তা নিরাপদ হবে।
 
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পর্যটন পুলিশের এসআই নাছির উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আগত পর্যটকদের বলা হচ্ছে। যাদের মাস্ক নেই তাদেরকে টিকিট কাউন্টার থেকে মাস্ক সংগ্রহ করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ।
 
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনার আসার পর গত শুত্রবার দুপুর থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আসা দর্শনার্থীদের করোনার বিধি-নিষেধ মানাতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। মুখে মাক্স ও হেন্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর আমরা ভিতরে প্রবেশ করতে দেই।
 
প্রথম দিন শুক্রবার দুপুরে লাউয়াছড়া উদ্যান খুলে দেওয়ার পর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রয় করা হয়। তবে এখন থেকে যদি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান স্বাভাবিকভাবে খুলা থাকে তাহলে সরকারের লাখ লাখ টাকা আদায় হবে এই লাউয়াছড়া পর্যটন কেন্দ্র থেকে।
 
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গত শুক্রবার থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শুধু লাউয়াছড়া নয়, জেলার বন বিভাগের সব পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র ১৯ আগস্ট খোলা হলেও বনবিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন পর্যটন কেন্দ্রগুলো গত শুক্রবার (২০আগস্ট) দুপুর থেকে খোলা হয়েছে।
 

এমএসি/আরএইচ