মহম্মদপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপা আমন চাষ

বুধবার ২৪ নভেম্বর ২০২১ ১০:২১


:: মেহেদী হাসান বাব্বী, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি ::
 
মাগুরার মহম্মদপুরে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপা আমন ও বোনা আমন ধানের চাষ হয়েছে। পাকতে শুরু করেছে রোপা আমন ও বোনা আমন ধান। পাকা ধানে সোনালি হয়ে উঠেছে বিস্তৃত মাঠ। কিছু কিছু এলাকায় ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। তবে কাটা-মাড়াই পুরোপুরি জমে উঠতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। এ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা।
 
মাঠ ভরা সোনা ঝরা ধানের সমারহ। মৃদু বাতাসে কাঁচা পাকা ধানের ঝংকার। যা দেখে ভরে যাচ্ছে কৃষক-কৃষাণীর মন। এরই মাঝে বছর ঘুরে আবার এসেছে নবান্ন উৎসব। অগ্রহায়নের হালকা হিমেল হাওয়ায় কাস্তে হাতে কৃষাণ দল বেঁধে সকাল-সন্ধ্যা মাঠের পাকা ধান কাটছেন।
 
নতুন ধানে ভরবে গোলা তাই বেজায় খুশি কৃষাণী। নতুন চলে কেউ কেউ তৈরি করবেন নানা রকম পিঠা
পাকা ধানে কৃষকের স্বপ্ন।
 
ইতিমধ্যে আগাম জাতের রোপা আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। অনুকূল আবহাওয়া ও পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় ভালো ফলনের বিষয়ে আশাবাদী চাষিরা।
 
মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় গড় খাদ্যের চাহিদা রয়েছে ৪৫ হাজার ৩শ ৫০ মেট্রিক টন। গড় হিসাব অনুযায়ী উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে ১৬ হাজার ৫শ ৫০ মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত থাকবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যা বিক্রি করে কৃষকের বাড়তি আয় হবে।
 
হরিনাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হালিম মোল্যা বলেন, অনুকূল আবহাওয়া, রোগ বালাই কম, আর সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগে এ বছর রোপা আমন ও বোনা আমন ধানের ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে।
 
দীঘা ইউনিয়নের আউনাড়া গ্রামের আনোয়ার মোল্যা জানান, গত বছর বোরো চাষ করিনি এবার করেছি। ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত আমার ক্ষেত দেখেতে আসে। এসপ্তাহে ধান কেটে ঘরে তুলবো।
 
উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জব্বার, সুমন মোল্যা, লিয়াকত মোল্যাসহ একাধিক কৃষক জানান, বোরো ধান কাটার পরই জমিতে রোপা আমন জাতের ধান লাগানো হয়। এ সময় বৃষ্টিপাত বেশী হওয়ায় এ জাতের ধান চাষে পানি সেচ ততটা দিতে হয় না। সার ও কীটনাশকও লাগে কম। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানে তেমন পোঁকার আক্রমণ হয়নি। কদিন পরই ধান কাটা পুরোপুরি শুরু হবে। বিগত বছরের চেয়ে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তাঁরা।
 
বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘুল্লিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি দাস বলেন, জমি চাষ দেওয়া থেকে শুরু করে চারা রোপনের শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষককে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছি। যেন রোপন করা থেকে শুরু করে কৃষক ফসল ঘরে তুলতে পারে।
 
মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবহান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষমাত্রা চেয়ে বেশি ধান চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন পাবে। কৃষকরাও  ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় রোপা আমন আবাদে ঝুঁকে পড়ছে কৃষক।
 
 
 

এমএসি/আরএইচ