বোয়ালমারীতে ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

বৃহস্পতিবার ৭ এপ্রিল ২০২২ ১২:৪৪


বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ::
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম (৫৫) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) উত্তম কুমার সেনের (৫০) বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (৬ এপ্রিল) ফরিদপুরের ৭ নম্বর আমলি আদালতে এ মামলার আবেদন করেন আতিয়ার রহমান নান্টু নামের এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছাড় মামলার অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আবেদন সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী ও ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান নান্টু ২০০০ সালের ২৩ মে বোয়ালমারীর পৌরসভার ওয়াপদার পাশে মৃত রশিদ মোল্লার স্ত্রী ও চার মেয়ের কাছ থেকে দুটি দলিলে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি কিনে ২ শতাংশ জমির ওপর দোকানঘর তৈরি করে ব্যবসা করে আসছিলেন। বোয়ালমারীর সোতাশী এলাকার বাসিন্দা দুই ভাই মো. ইয়াকুব হোসেন ও মো. বেলায়েত হোসেন রশিদ মোল্লার স্বজনদের কাছ থেকে একই জায়গার জমি কিনে ছিলেন।

দুই ভাইয়ের দাবী ও অভিযোগ, তাদের ক্রয়কৃত দাগের জমি ভোগদখল করছেন আতিয়ার রহমান নান্টু। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর ইয়াকুব হোসেন ও বেলায়েত হোসেন গুদাম দখলের চেষ্টা করেন। তখন ব্যবসায়ী নান্টু বোয়ালমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পর নান্টু ওসির কক্ষে গেলে ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তিনি ওসিকে ৫০ হাজার টাকা দেন।

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ওই দুই ভাই আবার তার গুদাম ঘরের তালা ভেঙে সিমেন্টের বস্তা ওঠানোর চেষ্টা করেন। তখন আতিয়ার রহমান বিষয়টি তাৎক্ষণিক ওসিকে জানান। ওই সময় ওসি তার কাছে পুনরায় ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এবার তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ওসি তখন হুমকি দিয়ে বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করবো। এ সময় এসআই উত্তম কুমার সেন চড় ও কিল-ঘুষি মেরে আতিয়ার রহমান নান্টুকে থানা থেকে বের করে দেন।

এ ঘটনার পরে আতিয়ার রহমান নান্টু ফরিদপুরের পুলিশ সুপার, ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, মহাপুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ দেন। স্থানীয়ভাবে ও বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় তিনি আদালতে মামলার জন্য এ অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, যে অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে সে অভিযোগ সত্য নয়।

এ বিষয়ে মামলার আবেদনকারী আতিয়ার রহমানের আইনজীবী লুৎফর রহমান বলেন, আতিয়ার রহমান নান্টু আদালতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের সত্য মিথ্যা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অভিযোগটি যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে আদালত পিবিআইকে তদন্তের ভার দিয়েছেন। পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযোগটি মামলায় পরিণত হবে। সত্য প্রমাণিত না হলে অভিযোগটি খারিজ হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, আতিয়ার রহমান নান্টু গত ৬ মার্চ আমার কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পরদিন ৭ এপ্রিল এক তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে।

এমএসি/আরএইচ