বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পাড়ে দুইশত বছরের পুরোনো উৎসব অনুষ্ঠিত

শনিবার ২৮ জানুয়ারী ২০২৩ ২১:৪৭


রইসুল ইসলাম ইমন::
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের সুতাবাড়িয়া গ্রামে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পাড়ে দুইশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মাঘে সপ্তমীতে অনুষ্ঠিত হয়। ভোর ৬টা থেকে কালী পুজা ও শিব পূজা পালনের মধ্য দিয়ে এ মেলার কার্যক্রম শুরু হয়। আর ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাক-ঢোল, শঙ্খসহ বিভিন্ন বাদ্য-বাজনা ও দর্শনার্থীদের মুহুর্মুহ কলরবে মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গন। মেলায় অনেক শিশুর বাৎসরিক মাথা মুন্ডু ও  নদীতে স্নান করানো হয়। এছাড়া মেলার কালী মন্দিরে পাঠা বলিদান ও শিব মন্দিরে ধুপ, চিনি ও মিষ্টি সামগ্রী দেয়া হয়। 
মেলায় রঙ বেরঙের আকর্ষণীয় বিভিন্ন খেলনার দোকান, পল্লীবাসীদের স্বহস্তে তৈরিকৃত বুনন শিল্পের সামগ্রী, গৃহস্থলীর ব্যবহার্য তৈজস পত্রের পণ্য সামগ্রী, মাটির তৈরি বাসন-কোসনের হরেক রকম দোকান, মিষ্টির দোকান, ফল-ফলাদির দোকান ও বিভিন্ন আইটেমের খাবারের দোকান দেখা যায়। 
হাজার হাজার দর্শনার্থীদের আগমনের মধ্য দিয়ে মেলাটি তার বিচিত্র রূপ বৈশিষ্ট্য ধারণ করে শত বছরের ঐতিহ্যের দৃষ্টান্ত হিসেবে আজও স্বগৌরবে প্রাণবন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে ঠাঁয় দাড়িয়ে আছে। ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মাঘে সপ্তমী মেলা আগে এক মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হত কিন্তু কালের বিবর্তেনে এখন মেলা একদিন অনুষ্ঠিত হয় মাঘে সপ্তমীর দিন জানালেন মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা।
দয়াময়ী মন্দির কমিটির সভাপতি বীরেন সমদ্দার বলেন, মন্দিরের আঙ্গিনার অনেক জায়গা আজ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জায়গার অভাবে দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলা এক সময়ে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা করছেন দয়াময়ী মন্দীর। তিনি আরো বলেন, এমতাবস্থায় সরকারি প্রশাসনিক ও আর্থিক সাহায্যের একান্ত প্রয়োজন। এককালীন ও বাৎসরিক সরকারি অনুদান পেলে মেলার আঙ্গিনার বিস্তৃৃতি ও মন্দির পুনঃসংস্কারের মধ্য দিয়ে মেলাটি আবার ফিরে পাবে তার পূর্ণ উদ্যম, উৎসাহ-উদ্দীপনা, দুইশত বছরের পুরনো লৌকিক ও ধর্মীয় কৃষ্টি সংস্কৃতির ঐতিহ্য যা মেলাটিকে নব যৌবনে সিক্ত করে প্রাণোচ্ছল ও প্রাণস্পন্দনের সম্মিলনে সঞ্জিবনী শক্তির সঞ্চার সাধন করবে বলে ঐকান্তিক বিশ্বাস।

এমএসি/আরএইচ