উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে শীর্ষ ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ কমাচ্ছে সরকার। ভারতে ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ কমেছে, গ্রামে যে প্রকল্পে বেশি কাজ করেন নারীরা। উচ্চ বেকারত্বের সময়ে বরাদ্দ ছাঁটাই গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে জানাচ্ছেন সে দেশের অর্থনীতিবিদেরা। এই সংকট থেকে বের হওয়ার পথও বাতলে দিয়েছে অক্সফাম। এ ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান অনেকটা ফরাসি অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটির মতো। তাদের মতে, বিভিন্ন দেশের সরকার জরুরি ব্যয় হ্রাস করে ২০২৩ সালে যে অর্থ বাঁচানোর কথা ভাবছে, ধনীদের ওপর বাড়তি বা অনুক্রমিক কর আরোপ করে সেই ব্যয় সংকোচন থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। পাশাপাশি এই দুর্যোগের সময় বাংলাদেশসহ অনেক দেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দ্বারস্থ হচ্ছে। তারা যেসব শর্ত দিচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যয় সংকোচন। অক্সফাম মনে করছে, আইএমএফের উচিত, এসব শর্ত থেকে বেরিয়ে আসা। এ ছাড়া তাদের দাবি, ধনী দেশগুলো পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে বিনা সুদে ঋণ দিক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রতি পাঁচটি দেশের মধ্যে অন্তত চারটি দেশ কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অবলম্বন করেছে। এসব দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার মতো খাতে ব্যয় হ্রাস করা হচ্ছে। কিন্তু এসব দেশের সরকার ধনীদের ওপর কর ও উইনডফল ট্যাক্স (যেসব কোম্পানি হঠাৎ করে বিপুল মুনাফা করেছে) আরোপ করছে না। প্রায় অর্ধেক দেশের সরকার নারী ও শিশুদের জন্য কিছু করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাদের ভাবখানা এমন, নারী ও শিশুরা যেন খরচযোগ্য। অক্সফামের নারী-পুরুষ সমতা ও অধিকার বিভাগের প্রধান আমিনা হেরসি প্রতিবেদনে বলেছেন, এসব কৃচ্ছ্রসাধনের শারীরিক, আবেগীয় ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব নারীদের বহন করতে হয়। কারণ, তাঁরাই এসব সেবার ওপর সবচেয়ে নির্ভর করেন। সে জন্য তাঁর মত, সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নারীদের প্রতি সহিংসতার নামান্তর। ব্যয় সংকোচন বা কৃচ্ছ্রসাধন অনিবার্য নয় বলেই মনে করে অক্সফাম। সরকার যেমন ব্যয় হ্রাস করে মানুষের ক্ষতি করতে পারে, তেমনি যাঁদের কর দেওয়ার ক্ষমতা আছে, তাঁদের ওপর কর আরোপ করতে পারে। বিষয়টি হচ্ছে, ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে যে পরিমাণ অর্থ সাশ্রয়ের চিন্তা করছে, বিশ্বের কোটিপতিদের ওপর অনুক্রমিক কর আরোপ করে তার চেয়ে অন্তত ১ লাখ কোটি ডলার বেশি আয় করা সম্ভব। সম্প্রতি জাতিসংঘের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশের শিশু ও নারীরা ইতিমধ্যে খারাপ অবস্থায় আছেন এবং অক্সফাম বিশ্বাস করে, এই কৃচ্ছ্রসাধনের নীতির কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে: