বিএনপি করায় ১৫ বছর অবরুদ্ধ একটি পরিবার

মঙ্গলবার ২১ জুন ২০২২ ১৭:৫৭


দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ::
পটুয়াখালীর দুমকিতে বিএনপি করায় ১৫ বছর যাবত এক পরিবারের চলার পথ অবৈধ ভাবে দখল করে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে। 

স্থানীয় ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠক হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের কতিপয় প্রভাবশালী নেতাদের কারণে বিষয়টি সুরাহা হচ্ছে না। এনিয়ে একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও ১৫ বছর চলে গেছে শুধু চিঠি চালাচালিতে। 

বাধ্য হয়ে অন্যের যায়গা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে অসহায় পরিবারটি। এবিষয়ে আবারও গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর চলাচলের পথ ফেরত পেতে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলা শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত সোবাহান হাওলাদারের মেয়ে পারভীন বেগম। দীর্ঘ ২৭ বছর মা ও খালার থেকে পারভীন,ছেলে আকাশ ও স্বামী শহিদুল ইসলাম দলিল মূলে ৩ শতাংশ যায়গা ক্রয় করে বসবাস করে আসছে।

শ্রীরামপৃর মৌজার ১৩৭ খতিয়ানভুক্ত দাগে তার (পারভীন বেগম)'র নানা ৬ শতাংশ যায়গা সাবেক ২ নং লেবুখালী ইউনিয়ন পরিষদে দান করেন বর্তমানে সেটি শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নামে পরিচিত। 

তৎকালীন সময়ের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল রশিদ গাজী রাতের আঁধারে পারভীন বেগমের বাসার সামনে ক্রয়কৃত খালি যায়গায় চলাচলের পথ রেখে জোরপূর্বক দুটি দোকানঘর নির্মাণ করে তার আত্মীয়দের মধ্যে মাটি ভাড়া দেন। 

এ নিয়ে একাধিকবার দেন দরবার করেও কোন ন্যায় বিচার পায়নি পরিবারটি। এভাবে চলতে থাকলে পারভীন বেগম স্ব-পরিবারে বরিশালে বেড়াতে গেলে গত (৮/৩/১৩ইং) তারিখে মুরাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ইউপি সদস্য মোঃ নাসির খাঁন পারভীন বেগমের চলাচলের পথে একটি আলগা দোকানঘর নির্মাণ করেন। 

এনিয়ে তখনকার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় লোকজন এবং লোকাল সার্ভেয়ার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের যায়গার সীমানা নির্ধারণ করা হয় যাতে চলাচলের পথের দোকানস পাশের দুটি দোকান পারভীন বেগমের মালিকানা যায়গায় প্রমাণিত হয়। মাপজোপে পারভীন বেগম যায়গা পেলে দখল বুঝে পাননি এখনও।

পারভীন বেগম জানান, আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। মূলত আমার স্বামী মোঃ শহিদুল ইসলাম খান বিএনপি করায় আমাদের চলাচলের পথে দোকানঘর নির্মাণ করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যখনই চলাচলের পথ নিয়ে স্থানীয় লোকজন কোন সমাধানে পৌঁছে তখনই পেছন থেকে তথাকথিত কিছু আওয়ামীলীগের নেতারা যাতে আমরা পথ ফেরত না পেতে না পারি সে জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। 

দুনিয়ায় কি কোন বিচার নেই। এত বছর যাদের যায়গা দিয়ে চলাচল করতাম তারা এখন সেখানে বসতঘর তুলছে। এখন আমরা চলাচলের পথ না পেলে বাসাবাড়ি ছেড়ে ছেলে সন্তান নিয়ে রাস্তায় থাকতে হবে।

এ বিষয়ে মোঃ নাসির খাঁন বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিয়দ থেকে বরাদ্দ নিয়ে দোকানঘর তুলেছি।

দুমকি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিএপি করায় তাদের অবরুদ্ধ করার বিষয়টি মিথ্যে এবং তারা যে যায়গা দাবি করেন সেটি ইউনিয়ন পরিষদের যায়গা।

শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম সালাম বলেন, বিএনপি করায় তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং যে যায়গাটি তারা দাবি করছেন আসলে সেটি ইউনিয়ন পরিষদের যায়গা। এতদিন তাদের হাটার বিকল্প পথ ছিলো তাই বিষয়টি তেমন গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়নি তবে এখন বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল ইমরান বলেন, ইতমধ্যে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে নিয়ে বসে সমস্যার সমাধান করা হবে।

এমএসি/আরএইচ