বাউফলে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহিদ মিনার

রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:২০


রইসুল ইমন, বাউফল (পটুয়াখালী)

বাংলা ভাষার ইতিহাস এক রক্তক্ষয়ী ত্যাগের ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী সালাম,রফিক,জব্বার,বরকত,শফিউর সহ নাম না জানা অনেক শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলা ভাষা। ভাষা শহিদদের এই আত্মত্যাগের শিক্ষা কেবলমাত্র বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে মহান করেনি সেই সাথে বাঙ্গালিদের দিয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনার মত সাহসিকতা। তাই বাংলাদেশী বাঙ্গালিদের সত্ত্বায় ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহিদদের স্মৃতি স্মারকগুলোর প্রতি রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি কলেজ ও বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন কাজের জন্য বিশেষ প্রয়োজনে শহিদ মিনার ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিলো। তবে দীর্ঘ বছরে অতিবাহিত হলেও শহিদ মিনার পুনঃনির্মাণ করা হয়নি।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  এবং '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ইতিহাস, চেতনা ও আত্মত্যাগ সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে শানিত করে সম্যক ধারণা দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকতে হবে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুবিধা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার বিবেচনায় সকল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই ন্যায় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজ। এই কাজের জন্য ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিলো এই প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনার। সেই ভবন নির্মাণ প্রায় ৮-৯ মাস আগে শেষ হলেও এখনো নির্মাণ করা হয় নাই শহিদ মিনার। সরকারি কলেজের শহিদ মিনারটিও ভাঙ্গা হয়েছিলো বেশ কয়েক বছর আগে। সেই স্থানে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে, পাঠদান সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারও হচ্ছে সেই ভবন কিন্তু আজ অবদি নির্মাণ করা হয় নাই ভাষা আন্দোলনে জীবন দেয়া বীর শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার।

এছাড়া বাউফলের অন্য সকল প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারের অধিকাংশই প্রায় সারা বছর পড়ে থাকে অবহেলা ও অযত্নে। যেন দেখার কেউ নেই।

বাউফল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাসার বলেন, আমি কিছুদিন আগে এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছি, যোগদানের পরে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন একাডেমি ভবন, শহীদ মিনার সহ সকল নতুন স্থাপনার জন্য বাজেট দিয়েছি। তবে বিগত বছরে কেনো শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণ করা হয় নাই সেটা আমার জানা নেই।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, শহিদ মিনার ভাঙ্গা বা পুনঃনির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমার জানা মতে ওই ভবনের এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। বিদ্যালয় খুললে আমি সকল শিক্ষক ও ভবন নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে নিয়ে আলোচনা করবো। যদি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নতুন শহিদ মিনার নির্মাণের কোন চুক্তিতে পুরানো শহিদ মিনার ভেঙ্গে থাকে তাহলে তাদেরকে সেটা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করার আদেশ দেয়া হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে এমন কোন চুক্তি না থাকলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নতুন শহিদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

 

এমএসি/আরএইচ