বাউফলে এমপির সংবর্ধোনা শোভাযাত্রায় না যাওয়ায় হোন্ডা চালকে মারধর

বুধবার ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৫৩


রইসুল ইমন, পটুয়াখালী প্রতিবেদক ::

পটুয়াখালীর বাউফলে স্থানীয় এমপি আ স ম ফিরোজের সংবর্ধোনা শোভাযাত্রায় যেতে অপরাগতা প্রকাশ করায় একজন মোটর সাইকেল চালককে বেধড়ক পেটালেন বিতর্কিত সেই ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বাউফলের এমপি আ স ম ফিরোজ সাহেবের ওমরা হজ্জ্ব পালন শেষে ঢাকা থেকে বাউফল আগমন উপলক্ষে তাঁকে সংবর্ধোনা জানিয়ে শোভাযাত্রা করেন বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ। সেই শোভাযাত্রায় যাওয়ার জন্য বেলা ১ টার দিকে বগা ইউনিয়নের হোগলা হোন্ডা স্টান্ডে আসেন বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।

সেখানে থাকা সকল ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালককে শোভাযাত্রায় যাওয়ার জন্য বলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন। কিন্তু শোভাযাত্রায় যেতে অপরাগতা প্রকাশ করেন মোটর সাইকেল চালক মোঃ কামরুল ইসলাম সুজন (৩২)। এই কারণে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও তাঁর সাথে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা মোটর সাইকেল চালক সুজনকে বেধড়ক মারধর করেন। সুজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন৷

মোটর সাইকেল চালক মোঃ কামরুল ইসলাম সুজন (৩২) বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের মোঃ বাদশাহ মিরার ছেলে।

ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক মোঃ কামরুল ইসলাম সুজন জানান, চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার হোগলা হোন্ডা স্ট্যান্ডে এসে শোভাযাত্রায় যাওয়ার জন্য বললে তিঁনি যেতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং বলেন তাঁর কাজ আছে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় চেয়ারম্যান এবং গালমন্দ করতে করতে মারধর শুরু করেন তাঁকে। তিনি আরো জানান, বিগত দিনে যতবার তিঁনি চেয়ারম্যান শাহিনের সাথে প্রোগ্রামে গিয়েছেন একবারও ভাড়া পায়নি। গরীব মানুষ পেটের দায়ে গাড়ি চালায়, ভাড়া না পেলে না খেয়ে থাকতে হয়। এ কারণেই তিঁনি মূলত শোভাযাত্রায় যেতে চায়নি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, কনদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার পর্যবেক্ষণকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি কাউকে মারধর করি নাই। উলটো এই সুজন, রাসেল, মোয়াজ্জেম, আশরাফ সহ ১০/১২ জন আমার দুইটা ছেলেকে অ্যাটাক করেছে। দুইজনকে কুপিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পুলিশ সাক্ষী আছে এবং পুলিশ ওদেরকে ধাওয়া দিয়েছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন পর্যবেক্ষণকে বলেন, কোন মোটর চালককে মারধরের বিষয়ে আমাদের জানা নেই।

উল্লেখ্য, এই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার সম্প্রতি সালিস বৈঠকের নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে বিয়ে করে ব্যাপক সমালোচিত হন। সাময়িক ভাবে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলেন। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় সে জেল হাজতে ছিলো বেশ কিছুদিন এবং কিছুদিন আগে দুদকের দায়ের করা মামলাতেও তিঁনি কারাগারে ছিলেন।

অভিযোগ আছে অনেক অপরাধ করার পরেও স্থানীয় এমপির আস্থাভাজন হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোন ধরনের দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

 

এমএসি/আরএইচ