বদরগঞ্জে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

রবিবার ৩০ জানুয়ারী ২০২২ ১৩:৫৫


মোস্তাফিজুর রহমান, বদরগঞ্জ:

বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৪ দিনে ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে (২৯ জানুয়ারি) শনিবার পর্যন্ত ওই পরীক্ষা করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা (রোগনিয়ন্ত্রণ) সাকলাইন রিফাত জানান, চার দিনে করোনায় আক্রান্ত ওই ৩২ জনের মধ্যে হাসপাতালের দুই চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্সচালক, দুজন নার্স ও একজন পথ্য সরবরাহকারী রয়েছেন। এ ছাড়া আট দিন আগে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরশাদ হোসেন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও দুজন নার্সের করোনা শনাক্ত হয়।

তিনি আরো জানান গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭ জন, পরের দিন বুধবার দুজনের মধ্যে ২ জন বৃহস্পতিবার ১৩ জন ১১ জন ও শনিবার ৮ নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। বর্তমানে উপজেলায় তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। করোনাও দ্রুত ছড়াচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে চলাফেরা করতে হবে।হাসপাতালের দুজন চিকিৎসক জানান, উপজেলায় করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করছেন না। এ কারণে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের বেশির ভাগই হচ্ছেন সর্দি–জ্বর ও গলাব্যথার রোগী।

বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক শাকির মুবাশ্বির জানান, হাসপাতালে অফিস চলাকালীন বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। উপসর্গ দেখামাত্র বিলম্ব না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। গত তিন দিন বদরগঞ্জ উপজেলার নাগেরহাট, পাঠানেরহাট, ট্যাক্সেরহাট, কালীরহাট, লালদীঘিরহাট ও বদরগঞ্জ পৌরবাজার ঘুরে দেখা গেছে, করোনা দ্রুত ছড়ালেও ওই হাটবাজারগুলোতে বিকিকিনি করতে আসা মানুষেরা গিজগিজ করছে। বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না।কয়েক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বাজারে আগত ব্যক্তিদের ৫ থেকে ৬ শতাংশ মাস্ক ব্যবহার করলেও তারা কেউ কেউ নাকের নিচে মাস্ক রেখে বাজারঘাট করে।

বদরগঞ্জ কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মাস্ক পরলে মোর দম বন্ধ হয়ে যায়। মুখত মাস্ক রাখি কথা কইলে মানুষের সাথে ঠিকমতো কথা কবার পাওনা। তোমরা দেখোছেন না মানুষ আর মাস্ক পরে না। করোনাকে মানুষ ভয় পায় না।

দেশে করোনার সংক্রমণ রোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দোকান, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলক সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনার টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট বলেন, বদরগঞ্জে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মানুষের মধ্যে মাক্স বিতরণ সহ মাঠে কাজ করছি।

এমএসি/আরএইচ