প্রেসক্লাবের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে সাংবাদিককে শোকজ

শুক্রবার ৮ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৩৪


:: অহিদুল ইসলাম, নওগাঁ প্রতিনিধি ::
 
নওগাঁর ‘মান্দা উপজেলা প্রেসক্লাব’ এর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রায়হান আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে। সেই সাথে তাকে সাতদিনের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে প্রেসক্লাবের সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে লিখিত ভাবে তাকে শোকজ করা হয়। 
 
জানা গেছে, গত ২৮জুন ২০২১ তারিখে উপজেলার সদরপুর গ্রামের বিরাজ দেওয়ানের ছেলে মোশারফ হোসেন (৩৫) এর মেয়ের সাথে সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে নাজমুল মন্ডলের প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক হয়। এর প্রেক্ষিতে সেখানে ছেলের বড় ভাই নুরুজ্জামান ওরফে রিপন এর নিকট প্রেসক্লাব সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়ে সাংবাদিক রায়হান আলী চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ উঠে। এই ঘটনার জের ধরে নুরুজ্জামান ওরফে রিপন গত (১৮ জুলাই ২০২১) তারিখে প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্বাস আলী, সহ-সভাপতি বুলবুল আহমেদ, সাংবাদিক রায়হান আলী ও ফজলুল করিম সবুজের নামে নওগাঁ আদালতে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।
 
এ ব্যাপারে সাংবাদিক ফজলুল করিম সবুজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পূর্বের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা। ঘটনার দুইদিন পর রায়হান আলী আমাকে তথ্য সংগ্রহের কথা বলে মামলার বাদী রিপনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এরপরে এ বিষয়ে আমি আর কিছু জানি না।
 
এ ব্যাপারে মামলার বাদী নুরুজ্জামান (রিপন) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন ২৮ জুন সন্ধ্যায় বিয়ের জন্য আমার ভাইসহ আমরা সদলপুর গ্রামে মেয়ের বাড়িতে যায়। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় আমাদের ৫-৬ জনকে আটকে রেখে মেয়ে পক্ষের লোকজন টাকা দাবি করে। ওই ঘটনায় সাংবাদিক রায়হান আলী আমাদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে প্রেসকাবের সভাপতি আব্বাস আলী ও সহ-সভাপতি বুলবুল আহমেদের কথা বলে এবং পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন। তার এরকম কথায় ভীত হয়ে ২২ হাজার টাকা তাকে দিয়েছি। 
 
তিনি আরো বলেন, ঘটনার একদিন পর রায়হান আলী তার সঙ্গী সবুজকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে পুলিশের ভয় দেখিয়ে আরো টাকা দাবি করেন। তবে সভাপতি আব্বাস আলী ও সহ-সভাপতি বুলবুল আহমেদকে আমি চিনিনা এবং কোনদিন দেখিনি। পুলিশ আমার ভাইকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার সাথে আমাকেও আসামি করেছে। আমিতো অপরাধ করিনি। তারপরেও আসামি হয়েছি। রায়হান আলী সাংবাদিক আব্বাস ও বুলবুল এর নাম করেছে। তাই তাদেরকে জড়িয়ে মামলা করেছি।
 
এ ব্যাপারে সাংবাদিক রায়হান আলী জানান, ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে আমি প্রেসক্লাবের কাউকে অবহিত করিনি বা কারো নাম ব্যবহার করে কোথাও টাকা দাবি করিনি। খবর পেয়ে সংবাদের জন্য ঐদিন আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। কি কারণে তারা চাঁদাবাজির মামলা করেছে তা আমার বোধগম্য নয়।
 
মান্দা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্বাস আলী এবং সহ-সভাপতি বুলবুল আহমেদ বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। ঘটনাটি জানার পরই জরুরী ভিত্তিতে মিটিং ডেকে রায়হান আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ৭দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে জবাব চাওয়া হয়েছে। আরো খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
 
 

এমএসি/আরএইচ