পরিবারসহ পালিয়েছে প্রতারক রঞ্জু সিকদার

বৃহস্পতিবার ২১ এপ্রিল ২০২২ ১৬:০৩


পাবনা প্রতিনিধি ::
রাতের আধারে পরিবার ও আসবাবপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে প্রতারক মামলাবাজ রঞ্জু সিকদার।তার পালিয়ে যাওয়ার খবরে এলাকার মানুষ মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। প্রতারক রঞ্জু সিকদার তার স্ত্রী সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পালিত মেয়ে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে আসছিল।

গ্রামের সাধারণ মানুষকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি মিথ্যা মামলা, চাকুরী দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিল তার পেশা । সম্প্রতি দুমাস আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পুর্নবাসন গ্রামে সে বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে । 

সিরাজগঞ্জে পুর্নবাসন এলাকায় যে বাড়িতে তারা ভাড়া থাকতো সে বাড়ির মালিক আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছয় সাত মাস আগে রঞ্জু সিকদার তার পরিবার নিয়ে আমার বাসা ভাড়া নেয়। সে হাসানুল হক ইনুর পালিত মেয়ে জামাই বলে পরিচয় দেয় । তার কিছুদিন পরেই শুরু হয় তার প্রতারণা।সে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পালিয়ে এসে সে বাসাভাড়া নেয় পাবনার আমিনপুর থানা এলাকায়। সে সকলের কাছে পরিচয় দেয় হাসানুল হক ইনুর মেয়ে জামাই।আমিনপুর বাসা ভাড়া নেয়ার পর থেকে শুরু হয় তার প্রতারণায় সহযোগিতার সদস্য সংগ্রহ। নারী শিশু নির্যাতন ও মাদকবিরোধী সংগঠন নামে একটা সুসজ্জিত অফিস খুলে বসেন।এলাকার চিহ্নিত সকল মাদক ব্যাবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিয়ে অফিস পরিচালনা শুরু করেন। তাদের নিয়ে শুরু হয় তার প্রতারণা। 

এখানে তার প্রতারণার মুল বিষয় ছিলো তার পালিত মেয়েকে ব্যাবহার বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা মামলা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া। গত দুমাসে আমিনপুর থানায় তিনি তিনটি অভিযোগ করেন।প্রথম দিকে থানায় অভিযোগ করে পুলিশকে ব্যাবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামিদের কাছে মিমাংসার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করাই ছিলো তার মুল পেশা। যেসকল অভিযুক্তরা টাকা দিতে পারতো না তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিতেন। 

ভুক্তভোগী জালাল খা জানান, কিছুদিন আগে আমার ছেলের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে ইভটিজিং করার অভিযোগ করেন সে যাত্রার অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।পরবর্তীতে আবার আমার ছেলের বিরুদ্ধে একি অভিযোগ করেন অথচ সে সময় আমার ছেলে পড়া-লেখার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছিলো।তারপরও আমার ছেলের বিরুদ্ধে ইভটিজিং মামলা রেকর্ড হয়।মামলা রেকর্ডের পর সে আবার আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবী করে আমি ৫০হাজার টাকা দিতে চাইলে সে বলেন আগামী কোর্ট ডেটে আমি আপনার ছেলের নাম কেটে দিব।
 
সম্প্রতি এক সাংবাদিকসহ আমিনপুরে বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের নামে তার মেয়েকে দিয়ে আমিনপুর থানায় ধষনের লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার দিন ও সময়ে আমিনপুর থানা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স সরাসরি সম্প্রচার করছিলেন। তারপরও রহস্যজনক কারণে আমিপুর থানা পুলিশ ওই সাংবাদিকসহ কয়েকজন সন্মানিত নামে অভিযোগের তদন্ত না করে তরিঘরি মামলাটি রেকর্ড করেন ।এতে পুলিশের ভাবমূতি প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে। 

এ ঘটনায় আমিনপুরে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে এবং মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন। পরবর্তীতে পুলিশের অধিকতর তদন্তের আশ্বাসে সাধারণ মানুষ অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।অধিকতর তদন্তে ভিত হয়ে জনরোসের হাত থেকে বাচতে আসবাবপত্র পত্র নিয়ে স্ব পরিবার নিয়ে পালিয়ে গেছে হাসানুল হক ইনুর কথিত জামাতা রঞ্জু সিকদার।

এমএসি/আরএইচ