পত্নীতলায় মরুভূমির ত্বীন চাষে সফল কৃষক

বুধবার ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:৫৬


:: সাকিব হোসেন, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি ::

পবিত্র কোরআনে আত ত্বীন সূরায় বর্ণিত মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বীন শোভা পাচ্ছে নওগাঁ, পত্নীতলায় । পরিক্ষা মূলক ভাবে উপজেলার 'তালহা এগ্রো ফার্ম' নামের একটি ফার্মে সাতটি ত্বীন গাছ চাষ করে সফল কৃষক। রসে ভরপুর, মিষ্টি ও সুস্বাদু  আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। গাছের প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় ত্বীন ফল জন্মে থাকে। ত্বীন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল, যা মরু অঞ্চলে ভালো জন্মে। এখন বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ  মানিয়ে নিয়েছে ত্বীন।

তালহা এগ্রো ফার্ম এর প্রতিষ্ঠাতা জাকির হোসেন (মিলন) বলেন,  তিনি চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে  গাজীপুর থেকে পরিক্ষা মূলক ভাবে চাষের জন্য ত্বীন গাছের চারা নিয়ে আসেন। ত্বীন ফলের চারা আনার সময় এটির ফলন হবে কিনা সেটি নিয়েও সংশয়ে ছিলেন জাকির হোসেন। এরপর নিজস্ব তালহা এগ্রো ফার্ম-এ নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় রেখে চারা রোপণ করেন। মাত্র তিন মাসে গাছে ফল আসতে শুরু করে পরর্বতী ছয় মাসের ব্যবধানে একটি করে ফল পাকতে শুরু করেছে। এখন তার মুখে স্বস্তির হাসি।
 
বর্তমানে  বাজারে ফলটি চাহিদা অনেক, দামও ভালো। প্রতিকেজি ফল বিক্রি হয় ৮শত থেকে ১ হাজার টাকা দরে। পাকলে লাল ও হলুদাভ রঙ ধারণ করে আশ্চর্য এ ফল। আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তিনি বলেন, সামনে বছরের মধ্যেই বানিজ্যিক ভাবে  এক বিঘা জমিতে ত্বীন চাষ করবেন ।
উপজেলার নজিপুর থেকে ত্বীন বাগান দেখতে আশা সোহাগ হোসেন জানালেন, তিনি ত্বীন বাগান দেখে অভিভূত হয়েছেন। এবং নিজে প্রাথমিকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে ত্বীন বাগান করবেন বলে মনে করছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকবর হোসেন জানান, পরিক্ষা মূলক ভাবে  ত্বীন ফলের  প্রজেক্টটির উদ্যোগ গ্রহণ হয়েছে। উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে এখনো ত্বীন ফল চাষ কোথাও করা হয়নি। আমি এই প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। রোগ বালাই নাই বললেই চলে।

ত্বীন চাষি  মিলন বলেন, বাগান সম্প্রসারণ করতে আমি গাছে কলম করতে শুরু করবো। কলমগুলো করে বাগান সম্প্রসারণের পাশাপশি সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করবো। ত্বীন ছাড়াও বাগানে রয়েছে কয়েক প্রজাতির আম, পেঁপে, কাঁঠাল, আপেল, এলাজ, মাল্টাসহ বিদেশি অনেক ফল গাছ।

ত্বীন বাগান ও চাষ পদ্ধতি জানতে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের চাষি, সাধারণ মানুষ বাগানটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। পরিদর্শনে আসা বিভিন্ন চাষি ও সাধারণ মানুষ ত্বীন ফলের চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, আরবের ডুমুর বাংলাদেশের মানুষের কাছে নতুন। বর্তমানে পরিক্ষা মূলক ভাবে চাষ করা হচ্ছে। ভালো ফলাফল পেলে পরর্বতীতে বিস্তর গবেষণা করা হবে।
 

এমএসি/আরএইচ