নির্যাতনের শিকার এলেমা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে

শুক্রবার ৩ জুন ২০২২ ০৯:৪৮


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ::
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের খারমাপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়ার মেয়ে এলেমা বেগম সুনারা স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন মৃত্যুর সাথে লড়ে যাচ্ছ।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে সুনারার স্বজনরা জানিয়েছেন, তার বাম চোখ মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নাকের হাড ও ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ চোখটি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। 

সুনারার স্বামীর বাড়ি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ভেড়ীগাঁও গ্রামে। তার স্বামীর নাম মিজানুর রহমান বকুল এবং শশুড়ের নাম আজাদ মিয়া। সুনারার স্বামী বকুল কুয়েত প্রবাসী, প্রায় দুই মাস আগে তিনি দেশে আসেন।

যৌতুকের জন্য বকুল ও তার মা-বোন মিলে (২৭ মে) শুক্রবার বিকেলে সুনারাকে নির্দয়ের মতো মারপিট করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় সুনারা ঘরের মেঝেতেই পড়ে ছিলেন। কিন্তু, কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি। 

প্রতিবেশীর বরাতে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান সুনারার ভাই ময়নুল ইসলাম। ঘটনাস্থল থেকে আহত সুনারাকে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে দ্রুত তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন কতব্যরত চিকিৎসক।

এই ঘটনায় সুনারার ভাই ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (২৮ মে) রাজনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সুনারার স্বামী বকুল, শাশুড়ি মিজারুন বিবি ও ননদ শেনা বেগমসহ আরো কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

এদিকে, মামলা দায়েরের পর বকুল আত্মগোপনে রয়েছেন। যে কোনো সময় তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা করছেন। তাই দ্রুত তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর স্বজনরা। স্বজনরা আরো জানান আজ কদিন হয়ে গেল কিন্তু এখন ও ঘাতককে ধরতে পারছে না।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- ৮ বছর আগে বকুলের সাথে সুনারার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বকুল প্রবাসে চলে যান এবং মাঝে-মাঝে ছুটিতে দেশে আসতেন। তাদের ৭বছর ও ৫বছর বয়সী দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বকুল প্রবাসে অবস্থানকালে তার মা-বোন যৌতুকের জন্য সুনারাকে প্রায় সময় মারপিট করতেন। 

সুনারার ভাই ময়নুল ইসলাম বলেন, বকুল দেশে আসার পর আমাদের কাছ থেকে  ৩ লাখ টাকা নিয়ে দেবার জন্য সে আমার বোনকে চাপ দেয়। আমাদের পক্ষে এতো টাকা দেয়ার সার্মথ্য না থাকায় তারা আমার বোনকে এভাবে মেরেছে। এখন তার জীবন সংটাপন্ন, একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। ওই চোখ দিয়ে সে আর পৃথিবীর আলো দেখতে পারবে কী না জানা নেই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজনগর থানার এসআই মোশাররফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে বৃহস্পতিবার (২ জুন) তিনি জানায়,২৯ মে রাতে বকুলের মা-বোনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বকুলকেও গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এমএসি/আরএইচ