নামাজে বাঁধা দেওয়ার অপরাধে হিন্দু যুবক আটক

শনিবার ১৬ এপ্রিল ২০২২ ১৫:৩৫


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ::
সাতক্ষীরা সদরের শিবপুর ইউনিয়নের বারপোতা মসজিদে ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ চলাকালীন সময়ে নামাজে বাঁধা দিয়েছেন অশোক সরদার (৪২) নামে স্থানীয় এক হিন্দু যুবক। বর্তমানে সে সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে আছেন। 

গতকাল শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ইফতারের পর নামাজ আদায়কালে এ ঘটনা ঘটে। মসজিদের মধ্যে নামাজ চলাকালীন সময়ে ইমামকে টেনে তুলে বলতে থাকে, তোদের দিন শেষ আমাদের দিন শুরু, হরে কৃষ্ণ হরে রাম। শনিবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে অশোক সরদারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল।

হিন্দু যুবক অশোক সরদার শিবপুর ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামের বিজবার সরকারের ছেলে।

বারপোতা মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, মসজিদে নামাজরত সকল মুসল্লিরা রোজাদার। মাগরিবের নামজের দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠকে থাকা অবস্থায় একজন হিন্দু ধর্মের ভাই সামনে গিয়ে আমার দুই হাত ধরে টেনে তুলেছে। এরপর বলছে, তোমাদের আর সময় নাই। এরপর তাদের ধর্মের যে গানগুলো সেটা বলা শুরু করেছে। 

আমি মনে করি, এটা আমাদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ।এদেশে নাকি মুসলমানরা হাঙ্গামা দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিচ্ছে বলে আমাদের উপর দোষ দেয়। কিন্তু আজ আমি দেখলাম সম্পূর্ণ বিপরীত। নামাজে থাকাকালীন সময়ে এটা কিভাবে করার সাহস হয়। মসজিদে আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বর বসা ছিলেন। আমার হাত ধরে তুলে বলে, হরে কৃষ্ণ হরে রাম এটা বলতে কিভাবে সাহস পায়।

ঘটনার সময় মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন পার্শবর্তী তেঁতুলতলা গ্রামের মোস্তফা গাইনের ছেলে রিয়াসাদ আলম। তিনি জানান, আমরা ইফতার শেষ করে নামাজ শুরু করি। মাগরিবের ফরজ নামাজের দুই রাকাত তখন শেষ পর্যায়ে। মসজিদে থাকা প্রায় একশো মুসল্লিরা সবাই নামাজের মনোযোগে ছিলেন। 

এমন মুহূর্তে একজন হিন্দু যুবক পাঁচ কাতার পেছন থেকে সামনে চলে যায়। সেখানে গিয়ে ঈমামের হাত টেনে ধরে তুলে বলছে, তোদের দিন শেষ আমাদের দিন শুরু- হরে কৃষ্ণ হরে রাম। মসজিদের ঈমামসহ মুসল্লিদের মাঝে তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও তখন নামাজ পড়ছিল। পরে চেয়ারম্যান তাকে মসজিদ থেকে বাইরে নিয়ে আসে। পরে ওই হিন্দু যুবক অশোককে তার ভাই পরিতোষের হাতে তুলে দেন ইউপি চেয়ারম্যান।

মুসল্লি রিয়াসাদ আলম আরও বলেন, মসজিদের উত্তর পাশে একটি মন্দির রয়েছে। সেখানে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে পূজা চলছে। পূজার ওই অনুষ্ঠাণে পাঁচ-ছয়শো মানুষ ছিল।

বারপোতা গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের ছেলে মুসল্লি সেলিম রেজা জানান, ঘটনার পর নতুন করে আবারও নামাজ আদায় করা হয়। 

নামাজ শেষে থানায় ঘটনাটি জানানো হলে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  মীর আসাদুজ্জামান ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম কবীর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং  অশোক সরদারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান।

এমএসি/আরএইচ