নান্দনিক উপস্থাপনায় প্রশংসিত রেজওয়ানা এলভিস

শনিবার ২৭ মে ২০২৩ ২৩:৩১


জনপ্রিয়তার এবং দর্শকপ্রিয়তার মাপকাঠিতে হাতে গোনা যে-ক’জন সংবাদ উপস্থাপক এগিয়ে আছেন বাংলাভিশন টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক রেজওয়ানা এলভিস তাদের মধ্যে অন্যতম।

বাংলাভিশন টেলিভিশনের সিনিয়ার সংবাদ উপস্থাপক রেজওয়ানা এলভিস অনার্স পাশ করার পর থেকেই টেলিভিশনে কিছু একটা করার তাগিদ কাজ করত । ২০০৯ সালে তিনি ১ই অগাস্ট স্পোর্টস রিপোর্টার হিসাবে যোগদান করে। এখান থেকেই শুরু হলো তার সাংবাদিকতার পথচলা। তারপর একুশে টেলিভিশনেই রিপোর্টার কাম প্রেজেন্টার হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেন।সেখানে এলভিস সংবাদ উপস্থাপনা,রিপোর্টিং এর পাশাপাশি একাধিক অনুষ্ঠানেরও উপস্থাপনা করেন। রেজওয়ানা এলভিস একুশে টেলিভিশনে থাকাকালীন সময় এস এ গেইমস, এশিয়ান গেইমস, আই সি সি ওয়াল্ডকাপ ২০১১ সহ অনেক দেশি বিদেশি ইভেন্ট রিপোর্টার হিসাবে কাভার করেন। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখে তিনি সিনিয়ার সংবাদ উপস্থাপক হিসাবে কাজ শুরু করেন বাংলাভিশন টেলিভিশনে। সেখানে সংবাদের পাশাপাশি স্পোর্টসের অনুষ্ঠানেরও উপস্থাপক হিসাবে কাজ করেছেন। এলভিস ভয়েজ আর্টিস্ট হিসাবে ও দেশ বিদেশের বহু যায়গায় জাতিয় এবং আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে মন্চ উপস্থাপক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এলভিস বহুবার বিভিন্ন রেডিও টেলিভিশনের টকশো, লাইফস্টাইলশো,সেলিব্রেটিশোতেও অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেছেন। রেজওয়ানা এলভিসের ১৪ বছরেরে ক্যারিয়ারে দেশি বিদেশি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। গনমাধ্যমে বিশেষ কৃতিত্বের কারনে এলভিস মিররের বেস্ট সংবাদ উপস্থাপকের এ্যাওয়ার্ড পান। রেজওয়ানা এলভিস ভ্রমন করতে অসম্ভব ভালোবাসেন। তিনি লন্ডন, ইটালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড সহ পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমন করেছেন। 

রেজওয়ানা এলভিস বেড়ে উঠেছেন একটি সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে। পরিবার এবং আত্মীয়স্বজন অনেকেই নাচ, গান ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং আছেন। সেই সুবাদে গান শিখেছেন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। তবে সংবাদ উপস্থাপনা প্রতি তার আগ্রহ ছিলো বুদ্ধি হবার পর থেকেই।ছেলেবেলা থেকেই অনেক মিশুক প্রকৃতির ছিলো রেজওয়ানা এলভিস । বন্ধুমহলেও তার জনকপ্রিয়তা ব্যাপক । তার পরিবারের সকল সদস্য সবসময় তাকে বলতেন তোমার বাচনভঙ্গি খুব সাবলীল সুন্দর আর সুরেলা। পরিবারের সকল সদস্যই তাকে উৎসাহ যোগাতেন তখন থেকেই হয়ত তখনই মনের মধ্যে সুপ্ত একটা ইচ্ছে তৈরি হয়েছিল। সেটিই তাকে এখানে নিয়ে এসেছে।

ছেলেবেলা থেকেই এলভিসের পরিবার ছায়ার মতো পাশে থেকে সব কাজে তাকে সহোযোগিতা করে গেছেন।তবে তারা মানসিকভাবে সমর্থন করেছেন। সত্যি কথা বলতে, পরিবারের সাপোর্ট ছাড়া এই পেশায় টিকে থাকা সম্ভব না। একজন গণমাধ্যমকর্মী বা একজন সংবাদ উপস্থাপককে ভোর থেকে শুরু করে রাতের যেকোনো সময়ে কাজ করতে হয়। কখনো ভোরে নিউজ পড়তে হয়, আবার কখনো দুপুরে কখনো-বা রাতে। 

রেজওয়ানা এলভিস মনে করেন, সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে সফল হতে হলে সবার আগে শুদ্ধ উচ্চারণ জানতে হবে, সুন্দর বাচনভঙ্গীরর অধিকারী হতে হবে আর পোশাক নির্বাচনসহ সবকিছুতে থাকতে হবে পরিমিতিবোধ। তাছাড়া আত্মবিশ্বাস, উপস্থিত বুদ্ধি, এবং সাবলীলতা থাকা খুব জরুরি। সবচেয়ে বড়ো কথা, একজন সংবাদ উপস্থাপক সংবাদের সবশেষ গেইটকিপার, সুতরাং সবার কাছে যে সংবাদটি আমি পৌঁছে দিচ্ছি সে সম্পর্কে আমার যেন সঠিক জ্ঞান থাকে সেটি নিশ্চিত করা। সময়জ্ঞান একটি অনেক বড়ো গুণ। যা একজন সংবাদ উপস্থাপকের অবশ্যই থাকতে হবে। সময়মতো অফিসে ঢোকা, সময়মতো রেডি হওয়া সময়মতো নিউজরুমে যাওয়া, সময়মতো স্টুডিওতে ঢোকা। এককথায় একজন সংবাদ উপস্থাপককে নিউজি হতে হবে। তানাহলে ভালো সংবাদ উপস্থাপক হওয়া সম্ভব না।

অবসরে গান শুনতে ভালোবাসেন এলভিস। গান শোনেন এবং নিজেও গান করেন। এলভিস ক্যান্সার সার্ভাইভ করেছেন এবং সুস্থও হয়েছেন তাই সুজোগ পেলেই মানুষকে মাঝেমাঝেই কাউন্সিলিং করেন । মানুষের নানান রকমের চিকিৎসায় যেভাবে সম্ভব সেভাবেই সহযোগীতা করা তার নেশা । তাই অবসর পেলেই মানুষের উপকারে ঝাপিয়ে পরেন। যদিও অবসর খুব কমই মেলে তার। রেজওয়ানা এলভিস সমাজসেবামুলক অনেকগুলো সংগঠনের সাথেই জড়িত। তিনি আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব (প্রতিতি লায়ন্স ক্লাবে’র) সেক্রেটারি হিসাবে আছেন। তিনি  আন্তর্জাতিক হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করেন। যেকোনো কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, বিশেষকের পাহাড় ও প্রকৃতির কাছাকাছি পরিবেশ উপভোগ করেন। বাংলাদেশের সিলেট জেলা তার খুব প্রিয় ।সেই সুবাদে সিলেটে ও লন্ডনে তার প্রচুর বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাংখি । প্রিয় খাবার- সময়ের ওপর নির্ভর করে। আলাদা করে বলতে গেলে পোলাও, একজালের গরুর মাংস ও হাওরের বোয়ালমাছ তার ভিষন প্রিয় খাবার।

এমএসি/আরএইচ