নাকশালা-বোয়ালী রাস্তা পাকা না হওয়ায় ভোগান্তিতে কয়েকটি গ্রামের মানুষ

রবিবার ২২ আগস্ট ২০২১ ১৫:৩৩


:: সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি ::



চলতি বর্ষায় টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের নাকশালা বাজার হতে লাঙ্গুলিয়া বটতলা পর্যন্ত  ৪ কিলোমিটার কাঁচা  সড়কে  চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এতে করে যাদবপুর, পাহাড়কাঞ্চনপুর, দেওবাড়ী, দাড়িয়াপুর, কাঙ্গালীছেও, লাঙ্গুলিয়া এবং বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বিশেষ করে এসব গ্রামের  গর্ভবতী মা, মুমূর্ষূ রোগী, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবিদের সবচেয়ে বেশী কষ্ট। তাদেরকে  কাদা-মাটিতে পায়ে হেটে প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে। খানাখন্দ আর কাদামাটি পরিপূর্ণ সড়কটি দিয়ে গরু এবং ঘোড়ার গাড়ী ব্যতিত  সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান, অটো চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে। জুতা খুলে পায়ে হেটে যেতেই অনেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে  কাপড়চোপড় নস্ট করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।  কেউবা কাদাযুক্ত কাপড়চোপড় নিয়ে লাজলজ্জা ভেঙে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় এমপিরা নির্বাচনকালে সড়কটি পাকা করণের  বার বার প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস প্রদান করলেও  যুগের পর যুগ চলে গেলেও সড়কটি পাকা করণের কোন পদক্ষেপ নেননি তারা।

শুক্রবার বিকেলে ওই সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলতি বর্ষায় উপজেলার নাকশালা বাজার হতে  লাঙ্গুলিয়া বটতলা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে চলাচলের একেবারেই  অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন প্রকার যানবাহন দূরের কথা পায়ে হেটে যাওয়ায় দুষ্কর। জুতা খুলে প্যান্ট ,লুঙ্গি  এবং মেয়েরা পায়জামা ও শাড়ী কুচিয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন।

অযোগ্য হয়ে পড়েছে এ এলাকার সবচেয়ে বড় বাজার নাকশালা বাজারে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য আনা নেয়া। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গর্ভবতী মা, মুমূর্ষূ রোগী, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবিদের কাদাপানিতে  চলাচলে।  জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির অসংখ্য খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে  প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে ওইসব গ্রামবাসীদের।

এ পথ দিয়ে হেটে যাচ্ছে  যাদবপুর  গ্রামের বাসিন্ধা রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, সজীব আহমেদ ,কলেজ ছাত্র রাব্বি, মহন সরকার, দুলাল মিয়া, গৃহীনি লায়লা বেগম, সালমা আক্তার। তাদের সাথে কথা বললে অনেকটা ক্ষোভের ভাষায় জানান, দেশে এতে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে, অথচ স্বাধীনতার এতো বছরেও আমাদের এ রাস্তায় একটি ইটও পড়েনি। আমাদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে গিয়ে চরম দূর্ভোগ প্রহাতে হচ্ছে।

তারা অচিরেই স্থানীয় এমপিসহ কর্তৃপক্ষকে  এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি এ সড়কটি  দ্রুত পাকা করণের  দাবি জানান। তারা আরো বলেন, সড়কটি পাকা না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। সড়কটি  পাকা হলে সখীপুর হতে অবহেলিতি এসব গ্রামের মানুষের কষ্ট লাগব এবং যোগাযোগ আরও সহজ হবে।  তাদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয়ের পাশাপাশি  নিত্য দুর্ভোগ হতে রেহাই পাবেন।

স্থানীয় মুজিব সিকদার, নূরুল ইসলাম, আমজাদ হেসেন জানায়, ছেলে-মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠালে তারাও যেতে চায় না। জোর করে পাঠালেও অনেকে পিছলে পড়ে অর্ধেক রাস্তা থেকে কাঁদায় মাখামাখি হয়ে ফিরে আসে । কোনো রোগী বা গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে বিপদে পড়তে হয়। ঘোড়া বা গরুর গাড়ি ছাড়া বিকল্প থাকে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী হাসান ইবনে মিজান  বলেন, এ রাস্তাসহ উপজেলা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পাকা করণের জন্য টাঙ্গাইল প্রজেক্টে তালিকা দেওয়া হয়েছে। একনেকে পাশ হয়ে তালিকা হাতে আসলেই বলা যাবে সড়কটি কতদিনের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

 

এমএসি/আরএইচ