নওগাঁয় স্কুল শিক্ষার্থী অবরুদ্ধের ঘটনায় যা ঘটেছিল

রবিবার ২২ মে ২০২২ ২৩:২৫


:: অহিদুল ইসলাম, নওগাঁ প্রতিনিধি ::
 
নওগাঁর মান্দায় শিক্ষার্থীদের সাড় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ রাখার ঘটনা সাজানো নাটক বলে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ। স্কুল কমিটির দ্বন্দ্বে ঘটনাটি অন্য খাতে প্রবাহিত করতে একটি মহল এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কসব ইউপির ৮৬ নম্বর পাঁজরভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এঘটনা ঘটিয়েছেন। 
 
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার দিন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম সহকারী শিক্ষিকাদের নিয়ে একই ইউনিয়নের শিয়াটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন ভিত্তিক আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ওই অনুষ্ঠানে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার শামসুজ্জামান  উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষিকা যোগদানের পূর্বে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে স্কাউট ক্লাবের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের স্কুলে রেখে যান। স্কুল মাঠের পাশে আত্রাই নদী থাকায় তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভিতর থেকে শিক্ষার্থীদের গেটে তালা দিতে বলে ওই অনুষ্ঠানের যান। এই সুযোগে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকার স্বামী রইচ উদ্দিন ভিডিও ধারণ করে তা সাংবাদিকদের নিকট সরবরাহ করেন। 
 
অবরুদ্ধের ঘটনার কয়েক জন শিক্ষার্থীরা জানান, রইচ উদ্দিন আমাদেরকে কান্না করতে বলে ভিড়িও ধারণ করেন। আমরা স্কাউটের কয়েকজন স্কুলের মেন গেটে তালা দিয়ে ভিতরে ছিলাম। 
 
স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সাহানা খাতুন বলেন, স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে আমরা স্কাউটের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে শিয়াটা স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান শেষ করে চারটার মধ্যে ফিরে আসি।
 
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে স্কুলের মাঠে ধানের কাজ করছিলাম। সে সময় ছেলেদের বললো তোমরা থাকো দুষ্টমী করোনা। তখন ছেলেরা বললো তালা লাগিয়ে দেন আমরা ভিতরে থাকবো। এরপর ছেলেরা নিজে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। তারপর ম্যাডামরা চলে যায়। পরে রইচসহ কয়েকজন ছেলেপেলে এসে বললো তোমরা কান্নাকাটি করো আমরা ভিডিও করবো। তিনি আরও বলেন স্কুল কমিটি নিয়ে ম্যাডামের সঙ্গে অন্তদন্ড চলছে।এর জের ধরে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। 
 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ বেগম জানান, শুক্রবারে স্কাউট এর পরীক্ষা ছিল সেজন্য তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সুযোগে রইচ উদ্দিন আমার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে না পারার কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
 
এ ঘটনায় রইচ উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, সাথী নামের এক শিক্ষার্থীর বাবা আমাকে জানালে স্কুলে গিয়ে ছবি ধারণ করি। পরবর্তীতে ছবিগুলো সাংবাদিকদের সরবরাহ করি।
 
এ ব্যাপারে মান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান বলেন, ওইদিন ইউনিয়ন পর্যায়ের আন্তঃ প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। ওই দিন ইউনিয়নের সকল প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। এই সুযোগে এলাকার কিছু মানুষ বাচ্চাদের ভিডিও ধারণ করে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে।

এমএসি/আরএইচ