দোয়ারাবাজারের সুরমায় চলাচলের একমাত্র ভরসা সাঁকো

বুধবার ৮ জুন ২০২২ ১২:১২


দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হাছনবাহারের ভাঙ্গায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে প্রায় তেরটি গ্রামের মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছেন প্রতিদিন তিন হাজার মানুষ।

কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায়ও পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ। বছরের পর বছর একটি ব্রীজের অপেক্ষা মানুষ।এলাকাবাসীর অভিযোগ  সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসলে নেতা আর কর্মীদের মুখে শুধু আশ্বাসের বাণী শোনা যায়।

নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর সাক্ষাৎ ও মেলে না। বছরের পর বছর শুধুই প্রতিশ্রুতি। একটি পাকা ব্রীজের অভাবে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারের একমাত্র ভরসা জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,হাছনবাহারের গ্রামের বাশের সাকোর উত্তর দিকে সুলতানপুর,নোয়াপাড়া,হযরত শাহ্জালাল হিঃকোঃ দাখিল মাদ্রাসা রসরাই ,মুক্তিযোদ্ধা কেপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল,লক্ষীপুর ইউনিয়ন ক্লিনিক,এরোয়াখাই,বাংলাবাজার এবং দক্ষিনে হাছনবাহার, বৈঠাখাই শাহ্আরফিনবাজার,বৈঠাখাই মাদ্রাসা, আলীপুর, মুহিবুর রহমান মানিক উচ্চ বিদ্যালয়,সোনাপুর,নূরপুর বাজারসহ বেশ কিছু গ্রাম অবস্থিত। এসব গ্রামের লোকজনকে এই সাকো ব্যবহার করে জেলা সদরে যেতে হয়। সাঁকোরস্হলে  ব্রীজ হবে হচ্ছে বলেই এলাকার মানুষ বছরের পর বছর অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।

হাছনবাহার গ্রামের (সফটওয়্যার ডেবলাপার)
কামরুল ইসলাম বলেন, বছরে ৬ মাস বৃষ্টি  হয়। হাছনবাহারের রাস্তা ঘাটের অবস্হা একেবার নাজেহাল।এ অবস্তায় কোন মানুষ অসুস্থ হয় গেলে চিকিৎসায় নিয়ে যাওয়ার আগেই সে মারা যাবে। কারণ সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা পারাপারের নেই ব্যবস্তা রোগী নিয়ে এত লম্বা বাঁশের সাঁকো পাড়ি দেয়া সম্ভব নয়। 

হাছনবাহার জামে মসজিদের সভাপতি আব্দুল আলী বলেন,স্বাধীনতার পর থেকেই কয়েকটি গ্রামের মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছি। আমাদের একটি স্বপ্ন ছিল হাছনবাহার ভাঙ্গায় একটি সেতু হবে। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা শত আশ্বাস দিলেও নির্বাচনের পর তা কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমাদের স্বপ্ন যেন স্বপ্নই থাকে। বাস্তবায়ন আর হয় না। আর কবে যে সেতু হবে আল্লায়ই যানে।

বৈঠাখাই শাহ্আরফীনবাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল মালেক বলেন,হাছনবাহারের ভাঙ্গায় যদি ব্রীজ হয় সুরমা,লক্ষ্মীপুর মান্নারগাঁও তিন ইউনিয়নের মানুষ সদর ও জেলা শহরে যেতে কোন অসুবিধা হবেনা। মানুষের যাতায়াতের জন্য এই ব্রীজটি খুবই গুরত্বপূর্ণ।

তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রায় তিন হাজার মানুষ এই ভাঙ্গা ব্রীজের উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে আনতে ও পশু পারা পারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

আলীপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির জানান, হাছনবাহার ভাঙ্গার সাঁকো পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। চলার সময় সেটি দোলে। অনেকে প্রায়ই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায়। 

সুলতানপুর গ্রামের রহমত আলী বলেন,আমি মুদিমাল ব্যবসায়ী মালামাল আনতে বৈঠাখাই শাহ্আরফিনবাজারে যেতে হয়।কিন্তুু হাছনবাহারের ভাঙ্গায় গেলে আর মন চায় না যে এতো লম্বা সাঁকো পাড়ি দিয়ে বাজারে যাই।

রসরাই দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা, তাহুরা আক্তার বলেন,বর্ষা কিংবা সারা বছরই হাছনবাহারের ভাঙ্গা এতো লম্না বাসের সাঁকো  পারাপার  হতে না পেরে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা অনকেদিন ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি ফিরে যায়।

সুরমা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হামিদ বলেন, হাছনবাহার ভাঙ্গার ব্রীজের কাজ পক্রিদিন রয়েছে। অল্প দিনের মধ্য কাজ শুরু হবে। 

সুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম (বীরপ্রতীক) বলেন ,আমি চেয়ারম্যান হয়েছি পাঁচ মাস।সুরমা ইউনিয়নে আমার আগে অনেক চেয়ারম্যান হয়েছেন। কেউ হাছনবাহারের ভাঙ্গার ব্রীজের কথা বলেননী। এখানে ব্রীজ জরুরী এ এলাকার কয়েক গ্রামের লোক এ রাস্তা দিয়ে চলাচল। ব্রীজ এ সরকারের আমলেই হবে ইনশাআল্লাহ। 

দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চোধুরী বাবু বলেন, হাছনবাহার সুরমা ইউনিয়নের এবং সুলতান লক্ষীপুর ইউনিয়নের এই দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্হানে ব্রীজের বিষয়ে আমি ছাতক দোয়ারাবাজারের সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে তাড়াতাড়ি সাঁকোরস্হলে ব্রীজ করে দেয়ার ব্যবস্হা করবো।

দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকোশলী সাবিরুল রহমান বলেল, হাছনবাহারের ভাঙ্গা না দেখে আমি কিছুই বলতে পারবো না।

এমএসি/আরএইচ