দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্ধন প্রকল্পের প্রায় ৩ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

মঙ্গলবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৩৯


:: মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ::


প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে সাতক্ষীরার তালায় মহন্দি বাজার-কাছিকাটা ভায়া খলিলনগর ইউপি ৫.৭৮০ কিঃমিঃ সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট,খোয়া,বালি দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজসে প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা বিল উত্তোলনের করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সড়কটির কাজ বন্ধ করায় চরম জনদূর্ভোগ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন পথচারীরা। বর্তমানে ঠিকাদার প্রকল্প এলাকায় আবারও কাজ শুরু করেছেন। তবে একই নিয়মে নিম্নমানের ইট,খোয়া, বালি দিয়ে কাজ করছেন।এছাড়া  হেজিংয়েও ব্যবহার করা হচ্ছে নিন্ম মানের ইট এমন অভিযোগ স্থানীয়দের । এনিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেলও কোন কর্ণপাত করেন না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সরকারের দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্ধন প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি তালার তত্ত¦াবধানে চলছে সড়ক নির্মাণকাজ। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলো ফেনীর মেসার্স হাসানুজ্জামান ভূইয়া এন্টারপ্রাইজ।দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্ধন প্রকল্পের আওতায় কাছিকাটা-মহন্দি বাজার ভায়া খলিলনগর ইউপি ৫.৭৮০ কিঃমিঃ সড়কটি মেরামত ও সড়কের পার্শ্ব প্রসস্থতার জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার প্রাক্কলিত বরাদ্দ দেয় সরকার। ১৫% লেসে প্রায় ৩ কোটি টাকার কাজটি পান ফেনীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসানুজ্জামান ভূইয়া এন্টারপ্রাইজ । কাজের শুরুতেই সিমাহিন দুর্নীতি ও অনিয়ম এর অভিযোগ উঠে ঐ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের শর্তানুযায়ী শুরুতেই প্রকল্প অফিস, লেবার বা শ্রমিক শেড করার কথা থাকলেও তা না করেই কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

সড়কটি প্রশস্তকরণে সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে কৌশলে নিন্ম মানের আধলা ইটের খোয়া ও বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। বালি আর খোয়া সমপরিমান দেওয়ার কথা থাকলেও কম দেয়া হচ্ছে খোয়ার পরিমান। এখন পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্তকরণে অধিকাংশ এলাকায় নিন্মমানের আধলা ইটের খোয়া ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া রাস্তার হেজিংয়েও ব্যবহার করা হচ্ছে নিন্ম মানের ইট। সরকারের কোন নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঠিকাদার তার ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে এমন অভিযোগ এলাকাবাসির।

খলিলনগর মহান্দী গ্রামের প্রনয়ন, আক্কাজ সরদার, ঘোষ নগরের প্রকাশ দালাল, জয়ন্ত হালদার, পাঁচমাথার সাহেব আলীসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আগের রাস্তাই ভালো ছিল। প্রসস্ত ও মেরামতের নামে নয়-ছয় ইট ব্যবহার করে রাস্তা করলে তা ৫/৬ মাসও টিকবে না।তাই তারা এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন, ঠিকাদার যেনো নিন্ম মানের দুই নং ইট দিয়ে রাস্তার কাজ না করেন।

এ ব্যাপারে খলিলনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সুবিধার্তে রাস্তাঘাটের মান উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা দিচ্ছেন। এলজিইডির দূর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঠিকাদার নয়-ছয় ইট ও খোয়া ব্যবহার করে সড়কটির উন্নয়ন করছে তা কোন ভাবেই আমরা মেনে নিবো না। সড়ক প্রসস্তকরণ কাজে নিন্মমানের খোয়া ও বালি ব্যবহার ও হেজিংয়ে যে দুই নাম্বার ই্ট ব্যবহার করা হয়ে তা অপসারন করতে হবে তা না হলে ইউনিয়বাসীকে সাথে নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মোঃ ইসরাফিল এ প্রতিনিধিকে জানান, ঠিকাদারী কাজে তাদের যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। নিম্নমানের ইট, খোয়া,বালি ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তারা কখনই কাজ খারাপ করেন না।তারা সব সময় ভালো কাজ করেন। সড়ক নির্মাণে ব্যবহারিত সামগ্রী ল্যাব টেষ্ট করানো হয়েছে। ওই সড়কের কাজ ভালই হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যেহেতু স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে কাজ করছি তাই লেবার শেডের কোন দরকার হচ্ছে না আর প্রকল্পের অফিস তাদের মাথায় আছে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে তালা উপজেলা প্রকৌশলী রথিন্দ্র নাথ এর বক্তব্য নিতে চাইলে রাস্তার ব্যাপারে কোন বক্তব্য তিনি উর্ধতন কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দিতে পারবেন না বলে জানান এপ্রতিনিধিকে।এসময় তিনি উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন।

এবিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ন চন্দ্র সরকারকে ফোন দিলে তিনি এ প্রতিনিধিকে প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে দেখতে বলে জানান,তিনি নিজে সরেজমিনে ৪/৫বার গিয়ে দেখেছি ইটের মান খারাপ না।ওখানে অনেক অনেক সমস্য আছে ,যার জন্য ঐ, সব কথা বলবো না ,ওখানে সাংবাদিক বেশী বুঝছেন।যারা কাজ পায় নাই তারা তো একটু ইয়ে করে। প্রকল্প এলাকায় অফিস ও লেবার শেডের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রকল্প এলাকায় অফিস করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। এসময় তিনি জেলায় থাকেন জানিয়ে লোকালে যারা আছে তাদের সাথে কথা বলতে বলেন।

এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক সুব্রত রায় চেীধুরী এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি অপনার মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হলাম।য়দি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে আমি এক্ষুনি প্রকল্পের প্রোজেক্ট ম্যানেজার সাতক্ষীরা এক্সসিএন এর সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।এসময় সড়ক নির্মাণে কোনো অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।  

 

এমএসি/আরএইচ