ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

বুধবার ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ১১:১১



নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে অনশন ভাঙলেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে ৭ দিন পর তারা অনশন ভাঙলেন।
এর আগে, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাদেরকে একে একে অনশনস্থলে নিয়ে আসা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের মুখে খাবার তুলে দেন।

এর আগে, বুধবার ভোর ৪টার দিকে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক। তার অনুরোধে আন্দোলনকারীরা অনশন ভাঙতে সম্মত হন।

এসময় সাংবাদিকদের ড. জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীরা ইতিহাস গড়েছে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের আগে ভাবা হবে। এসময় আন্দোলনে মানবিক সহায়তা দেয়ায় সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করার নিন্দা জানান তিনি। বঙ্গবন্ধুর ওপর আর্টিকেল লিখে পাওয়া ১০ হাজার টাকাও শিক্ষার্থীদের তুলে দেন তিনি।

এছাড়া, জাফর ইকবালের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙতে সম্মত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে দেখতে চান না বলে দাবি তোলেন।

এদিকে, সোমবার ঢাকায় একাধিক স্থানে অভিযানে চালিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থের যোগান দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শাবিপ্রবির সাবেক ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে সিআইডি। পরে তাদের সিলেটের জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাত থেকে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই হলের কয়েক’শ ছাত্রী। সেই আন্দোলনের এক পর্যায়ে জাফরিন আহমেদ পদত্যাগ করেন। এর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। নতুন দাবি যুক্ত করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৬ই জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে আইসিটি ভবন থেকে উপাচার্যকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ওই ঘটনার পর অজ্ঞাত কয়েক’শ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। সেই মামলা প্রত্যাহার এবং উপাচার্যের পদত্যাগের নতুন এক দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গেল বুধবার উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অনশনে বসে ২৪ শিক্ষার্থী। পরে আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেয়।

এমএসি/আরএইচ