ডোমারে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির তান্ডব

সোমবার ১১ এপ্রিল ২০২২ ১৫:১৭


মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার ::
চৈত্রের শেষে হতে না হতেই বৈশাখের আগমন বার্তা নিয়ে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ১ নং ভোগডাবুড়ী ও ২ নং কেতকীবাড়ী ইউনিয়নে আকস্মিকভাবে কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডব ও শিলা বৃষ্টিতে জমির ফসল, গাছপালা, ঘরবাড়ী লন্ডভন্ডসহ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। 

গতকাল রবিবার (১০ এপ্রিল) শেষ বিকালের দিকে হঠাৎ বিক্ষিপ্তভাবে জেলার ডোমার, ডিমলা,এবং জলঢাকা উপজেলার ওপর দিয়ে ওই ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঝড়ে প্রায় সহস্রাধিক ঘরবাড়ী, অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার চিলাহাটি ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নসহ অনেক এলাকা।

ডোমার উপজেলার চিলাহাটি বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফ জানান, হঠাৎ করে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় হানা দেয়। মাত্র দুই থেকে তিন মিনিট স্থায়ী ওই ঝড়ে চিলাহাটি বাজারের অসংখ্য দোকান ঘরের টিনের ছাউনি বাতাসে উড়ে যায়। এছাড়াও চিলাহাটি সরকারি কলেজের সামনে ১১ হাজার কেভি বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়লে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারে আছন্ন হয়ে পড়ে গোটা চিলাহাটি ও কেতকীবাড়ী এলাকা। ওই ঝড়ে ভোগডাবুড়ী ও কেতকিবাড়ী ইউনিয়নে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় অন্তত তিন শতাধিক কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পড়ে। 

এসময় অসংখ্য গাছপালা রাস্তায় উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ ও চলাচল ব্যবস্থায় সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। একইভাবে উপজেলার গোমনাতী ও পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে গতি বেয়ে চলে যায় । এসময় ঝড়ের আঘাতে ভুট্টা, বাদাম ও তামাকসহ আরও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সমুক্ষিনে পড়ে । 

ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি এলাকার কৃষক মফিজার রহমান জানান, আমি ৫ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধানের ফসল লাগিয়েছি, হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব ও শিলা বৃষ্টিতে জমির সব ফসল মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে।

ভোগডাবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি  রেয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, অত্র ইউনিয়নের মধ্যে চিলাহাটি বাজার, বউবাজার, বোতলগঞ্জ এলাকাসহ চারটি ওয়ার্ডে ব্যপক ও অপর পাঁচটি ওয়ার্ডে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। কালবৈশাখীর তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর ঘরবাড়ি পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

ডোমার সদর উপজেলার মোশারফ হোসেন জানান, দুই থেকে তিন মিনিটের ঝড়ে আমার ৩বিঘা জমির তামাক সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। 

একই সময়ে কালবৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টি  আঘাত হেনেছে জেলার ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া, খগাখড়িবাড়ী, পূর্ব ছাতনাই,গয়াবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশাচাপনী ইউনিয়নের ওপর দিয়ে। এসব ইউনিয়নে অন্তত এক হাজার কাচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।

এ বিষয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাহিনা শবনমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ঝড় বৃষ্টিতে যাদের ঘরবাড়ী ও জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য স্থানীয় জন প্রতিনিধিদেরকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।

এমএসি/আরএইচ