জমি অধিগ্রহণে ন্যায্যমূল্য চাই, সংবাদ সম্মেলনে মালিকদের দাবি

রবিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:০৪


:: যশোর প্রতিনিধি ::
যশোরের অভয়নগরে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) জন্য জমি অধিগ্রহণের পূর্বে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অধিগ্রহণের তালিকায় থাকা জমির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন জমির মালিকরা। মৌজা ভেদে শতকপ্রতি ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যবধান তৈরি হয়েছে। ছয় বছর পূর্বের মূল্য নির্ধারিত হওয়ায় দুই-তিন গুণ দাম কম ধরা হয়েছে। ইপিজেড নির্মাণে বিরোধিতা না করলেও জমির ন্যায্যমূলসহ মৎস্য ঘের, ফলজ ও বনজ গাছের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তারা।

এসব বিষয় তুলে ধরে রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জমির মালিকরা উপজেলার নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যশোরে প্রস্তাবিত ইপিজেডের অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াধীন জমিগুলো অভয়নগর উপজেলার ধলিয়ার নামক বিলে। এ বিলে আটটি মৌজা রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গা, রাজাপুর, আরাজি বাহিরঘাট, চেঙ্গুটিয়া, মহাখাল, মাগুরা, আমডাঙ্গা ও ১১ নং পোমভাগ মৌজা। ইপিজেড নির্মাণে মৌজাগুলো থেকে ৫০২ একর ৬১ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হবে। তবে মৌজা ভেদে জমির মূল্য নিয়ে বৈষম্য দেখা দিয়েছে। ১১ নং পোমভাগ মৌজায় জমির মূল্য শতকপ্রতি ২২ হাজার ৮৯১ টাকা।

অথচ ওই একই বিলে বালিয়াডাঙ্গা মৌজায় শতক হিসেবে জমির মূল্য ৮ হাজার ৭১৬ টাকা, রাজাপুর মৌজায় ৮ হাজার ৬৮৩ টাকা, আরাজি বাহিরঘাট মৌজায় ১৩ হাজার ৩৪৬ টাকা, চেঙ্গুটিয়া মৌজায় ১২ হাজার ৩১৬ টাকা এবং মহাকাল মৌজায় ১২ হাজার ৯০১ টাকা ধরা হয়েছে। একই বিলে জমি হলেও মৌজা আলাদা হওয়ায় দামে ব্যবধান হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত মূল্য সরকার নির্ধারিত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের হিসেবে করা হয়েছে। গত ছয় বছরে এসব জমির বাজারমূল্য তিন-চার গুণ বেড়েছে। যে কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাঁচটি মৌজার জমির মালিকরা।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ৫০২ একর ৬১ শতক জমির মধ্যে আনুমানিক ২৭৫ একর জমিতে শতাধিক মৎস্য ঘের রয়েছে। অনেকে ঋণ নিয়ে মৎস্য চাষ করছেন। ঘের পাড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতীর ধরন্ত ফলজ ও বনজ গাছ। জমির ন্যায্যমূল্যের সঙ্গে মৎস্য ঘের, ভেড়ি ও গাছপালার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ইতোপূর্বে উল্লেখিত দাবি আদায়ের লক্ষে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দেশের উন্নয়নে আমরা ইপিজেডের বিপক্ষে নয়, তবে আমরা যারা আজীবন বৈধ জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্থ হতে যাচ্ছি তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুদৃষ্টি দেবেন বলে কামনা করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমির মালিক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইউনুস আলী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জমির মালিক শফি কামাল, কোমল সাহা, পিন্টু গাজী, আবুল হোসেন, শেখর কুমার বর্মণ, রেজওয়ান বিশ্বাস, ইব্রাহিম বিশ্বাস, আলাউদ্দিন মোড়ল, আছর আলী বিশ্বাস, মিঠুন সরদার, শান্তনু কুমার ঘোষ প্রমুখ।

এমএসি/আরএইচ