চলমান লোডশেডিংয়ে চা শিল্পে সঙ্কট

সোমবার ২৫ জুলাই ২০২২ ২০:৫৮


:: তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ::
বিদ্যুতের চলমান ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে মৌলভীবাজার জেলার ৯৩টি চা বাগানে উৎপাদনে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সময়মতো চা কারখানা চালু করতে না পারায় চায়ের গুণগত মান পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
শিল্প এলাকায় লোডশেডিং না করার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিপণ্যে চা শিল্পের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। ফলে চা বাগান অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের গ্রামেগঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে লোডশেডিংয়ে পড়তে হচ্ছে। ভয়াবহ এই লোডশেডিংয়ের ফলে এসব চায়ের কারখানা এক ধরনের অচল অবস্থা হওয়ার উপক্রম।জানা যায়, বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিক চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি। তারমধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯৩টি চা বাগান।
চা বাগানের ব্যবস্থাপকরা বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যাক্টরি চালু রাখতে পারছি না। জেনারেটর দিয়ে কারখানা চালু রাখতে হয়। এতে চায়ের গুণগত মান নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন- যদি বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে রক্ষা পাওয়া না যায়, তাহলে আমরা বিশাল লোকসানে পড়ে যাবো।
বাংলাদেশ চা অ্যাসোসিয়েশন সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, এখন চা উৎপাদনের পিক সিজন চলছে। বিশেষ করে চায়ের উৎপাদন জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বেশি হয়ে থাকে। পর্যটন নগরী ও চা শিল্প এলাকায় লোডশেডিং না করার কথা থাকলেও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের চায়ের কারখানাগুলো চালাতে পারছি না। এতে একদিকে যেমন চায়ের উৎপাদনে ধ্বস নামছে, ঠিক তেমনি চায়ের গুণগত মান ধরে রাখা খুবই কঠিন। এ বিষয়ে আমরা বিদ্যুৎ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
চা বাগান এলাকায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সদর শ্রীমঙ্গলের মহা-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলার চা বাগান এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৩টি ফিডার রয়েছে। এসব ফিডার থেকে ১৮টি সাব স্টেশনের মাধ্যমে চা বাগানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পুরো জেলায় বিদ্যুতের গ্রাহক ৪ লাখ ২০ হাজার। পিক আওয়ারে ৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা থাকে। ওই সময় পাচ্ছি মাত্র ৬০-৬৫ মেগাওয়াট। অপিক আওয়ারে ৬০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলে, সেখানে ৪০ মেগাওয়াট পাচ্ছি। সেই হিসাবে আমরা এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং দিয়ে দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, মৌলভীবাজার পর্যটন এলাকা হওয়ায় সেখানে একটু বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। যেমন হোটেল রিসোর্ট এবং চা কারখানাগুলো চালু রাখতে পারে সেদিকে একটু বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তারপরও আমি চা বাগানের বিষয়ে আলাদা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুৎয়ান বোর্ডকে চিঠি পাঠাচ্ছি।

এমএসি/আরএইচ