চমেকে দুই শর্তে লাশ কাটছে ডোম কদম আলী

সোমবার ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৪৯


:: ইব্রাহিম আল সোহাগ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ::

দুইদিন স্থবির থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের কাজ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ডোম কদম আলী কাজ ছেড়ে দিলে বিপাকে পড়ে কর্তৃপক্ষ। দুই শর্তে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কাজে যোগ দেয় ডোম কদম আলী।

জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ কাটার জন্য মাত্র একজন ডোম রয়েছে- কদম আলী। কদম আলী হাসপাতালে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী না। একসময় ওস্তাদ নেপাল ডোমের সাথে কাজ শিখেছে কদম। ২০০২ সালে ওস্তাদ মারা গেলে লাশ কাটাকে পেশা হিসেবে নেয় কদম আলী। সেই থেকে আছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। তবে ডোম কদম কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায় না। শেষপর্যন্ত তার দুই দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে কাজে ফিরেছে ডোম কদম।

কদম আলী জানায়, আমার দুইটা দাবি ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সুমন মুৎসুদ্দিকে জানিয়েছি। এর একটি হলো- আমার চাকরি সরকারিকরণ অথবা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে হলেও যাতে আমার বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। পাশাপাশি সমীরণকে মর্গ থেকে সরিয়ে নিতে বলেছি। সমীরণ আমার নাম ভাঙিয়ে রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে টাকা-পয়সা আদায় করে। বিভাগীয় প্রধান দাবি মেনে নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি মিলন নাথ নামে আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

এদিকে আজও (সোমবার)  ভোগান্তিতে পড়ে লাশঘরে আসা স্বজন ও পুলিশ সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘সকাল ৯টায় দু’টি লাশ নিয়ে এসেছি। দুপুর দেড়টার পরও কাজ শুরু হয়নি। একরকম অনিশ্চয়তার মাঝে ছিলাম। কদম আলী ২টার দিকে এসেছে। আমার আনা দুইটা ছাড়াও আরও ৫টি লাশ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে মৃতের স্বজনরা। কতক্ষণে কাজ শেষ হবে বলতে পারছি না।’

গতকাল (রবিবার) সকাল ১০টা থেকে মর্গের সামনে ভাইয়ের লাশের জন্য অপেক্ষায় আছেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে ভাই মারা গেছে। গতকাল পারিনি ডোম কদম আলী ছিল না। আজ দুপুরে এসেছে। কাজ শেষ হলেই চলে যাব। দোয়া করি, কাউকে যেন মর্গে আসতে না হয়।’

এ বিষয়ে জানতে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সুমন মুৎসুদ্দির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

 
 

এমএসি/আরএইচ