ঘাটাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মহাড়ম্বর 

রবিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৪৫


:: নজরুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি ::
 
 
পিতা -মাতা ও সন্তানের ভালোবাসা পৃথিবীর সব ভালোবাসার উর্দ্ধে। মা তার সন্তানের বিপদ-আপদ আগে বুঝেন এটাও যে সেই ভালোবাসার-ই বাস্তব চিত্র। বাবা-মা'র হাতে প্রাক শিক্ষা শুরু হলেও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য যেতে হয় বিদ্যালয়ে।এখানেও যেনো শিক্ষক/শিক্ষিকা মা-বাবার আরেক প্রতিরূপ।  কোমলমতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কচি-কাঁচাদের কথা বলছি।
 
কাঁদছিলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সুন্দইল পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হযরত আলী স্যার। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধোঁয়ামোছা  চলছিলো কয়েক দিন ধরেই।চলছিলো বিদ্যালয়ের আশপাশের পরিবেশটাও গোছানোর কাজ।
 
লক্ষ্য, আজ ১২সেপ্টেম্বর নিয়ম মেনে ক্লাশ শুরু।আর সে কারনেই ঘাটাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ ছিলো, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন যেনো ছাত্র-ছাত্রীদের নিজ নিজ শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান ধোঁয়ামোছার কাজে অংশ গ্রহন করান।
 
বলেছিলাম সাতজন ছাত্রকে। সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি প্রায় সকল ছেলেমেয়েই উপস্থিত। বিদ্যালয়ের ড্রেস পরে মহা আনন্দে যেনো ঈদ উদযাপন। বুকটা ভরে গেলো ওদের কাছে পেয়ে। কতোদিন দেখিনা, সে বিষন্নতা যেনো সাময়িক ভুলে থাকলাম। চোখের জন মুছতে মুছতে বিদ্যালয়ের গতকালের চিত্র বলছিলেন ও বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছিলেন হযরত আলী স্যার।
 
সকাল ৮টা। ছেলেমেয়েরা আসতে শুরু করেছেন। আল্লাহর রহমতে করোনা মহামারী কাটিয়ে স্ব-শরীরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পেরেছি এবং দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ের আঙিনা শিশু-কিশোরদের কলরবে ভরে যাবে এ যে পরম পাওয়া আমাদের জন্য,  প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ  এমনটি-ই বলছিলেন।
 
উপজেলার মোথাজুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ বাছেদ মাষ্টারের কাছেও একই কথার পুনরাবৃত্তি পেলাম। আমিই পৃথিবীর সব থেকে সুখী যে, আমার ছেলে-মেয়েরা (ছাত্র-ছাত্রীরা) আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে।আমার বুকটা আজ শীতল হয়েছে।
দীর্ঘ ১৮মাস তথা ৫৪৪দিন স্যারদের শাসন-বারণ থেকে অব্যাহতির কারন হিসেবে করোনার প্রভাব যেমন ছিলো তেমনই অভাব ছিলো শিক্ষকদের ভালোবাসা ও আদরের। আজ বিদ্যালয়ে আসতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সানিয়া বলছিলেন
কথাগুলো।
 
এদিকে তৃতীয় শ্রেণীর মারুফিয়া যেনো আনন্দে আত্মহারা। খুব ভোঁরেই সকালের খাবার না খেয়ে সেঁজেগুজে বিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত। অবশ্য পরে তার মা, খাবার নিয়ে আসেন।
 
ঘাটাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদুর রহমান মোবাইল যোগে  বলেন, সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযারী স্বাস্থ্যবিধি ও কিছু নিয়ম মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাশ পরিচালিত হবে।
 

এমএসি/আরএইচ