গাইবান্ধায় ছাত্রলীগ নেতা রকি হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার  

সোমবার ৪ অক্টোবর ২০২১ ১৬:২০


গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলর  ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক  আশিকুর রহমান  রকি হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামী ইমরানকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সাথে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে সরাসরি যুক্ত থাকায় রবিন নামের অপর একজনকে আটকের কথাও জানায় পুলিশ।
 
সোমবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম।
 
গ্রেপ্তারকৃত ইমরান (৩৪) পূর্বপাড়া এলাকার ইলিয়াস আলী ওরফে বাঙ্গালির ছেলে ও আটককৃত রবিন (২৮) গাইবান্ধার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান হাসু মিয়ার ছেলে। সে সদর থানার একটি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এখন পর্যন্ত এ মামলায় এজাহার নামিয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো।
 
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ১১ জুলাই রাতে শহরের পূর্ব পাড়ায় ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রকিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন ১২ জুলাই ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে, মামলার প্রেক্ষিতে এজাহার নামীয় মানিক নামের একজনকে গ্রেপ্তার ও সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের থেকে পুলিশ অনেক তথ্য-উপাত্ত পেয়েছিল যা তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের জানানো হয়নি।
 
এসময় পুলিশ সুপার আরো জানায়, “আসামিরা খুবই চালাক প্রকৃতির। গ্রেপ্তারকৃত ইমরান তার পরিবারের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি লোহাগলা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। সেখানে তার নাম ইমরান পরিবর্তন করে বাঁধন নাম রেখেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু লাইস মোহাম্মদ ইলিয়াস জিকু, সদর থানার ওসি তদন্ত আব্দুর রইফ, ওসি অপারেশন রজব আলী ও জেলা গোয়েন্দা শাখা এস আই নওশাদ এর প্রত্যক্ষ অভিযানে তাকে ঢাকার যাত্রবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ইমরান কে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে রবিনকে তার বাসা থেকে আটক করা হয়”।
 
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন,” গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য-উপাত্ত, হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অনেক নাম পাওয়া গেছে। যা তদন্ত ও অন্যন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে, হত্যাকান্ডের কারণ হিসেবে স্থানীয় আধিপত্য ও পূর্ব শত্রুতা দুটি কারণ উল্লেখ করলেও তদন্তের স্বার্থে অন্য কারণগুলো প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলেও জানান পুলিশ সুপার”।
 
এর আগে গত (১১ জুলাই) রবিবার রাত ১০ টার দিকে আশিকুর রহমান রকি ও তার দুই সহযোগী গাইবান্ধা শহর থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা গাইবান্ধা-বালাসী সড়কের পুর্বপাড়া হালিম বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে পৌছলে রকি ও তার দুই সহযোগীর পথরোধ করে  মারপিট শুরু করে।
 
এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশিকুর রহমানকে আঘাত করলে এতে রকি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান । পরে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রকিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং রকির দুই সহযোগী সোহেল মিয়া ও প্লাবনকে ভর্তি করা হয়।
 
এ ঘটনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে, হত্যকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ এনে শহরের পূর্বপাড়া এলাকার কাঞ্চনকে প্রধান আসামিসহ একই এলাকার নবাব আলীর ছেলে সোহাগ (৪০) ও মানিক (৪৫) ইলিয়াস আলী ওরফে বাঙ্গালির ছেলে ইমরান (৩৪) উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রকির বড় ভাই আতিকুর রহমান রোস্তম
 
খুন হওয়া রকির বাড়ি ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত সাইদার রহমান এর ছেলে। ২০১৫ সাল থেকে রকি ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
 
এখন পর্যন্ত এ মামলায় এজাহার নামিয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার ও পাঁচজন আসামিকে আটক করা হয়েছে। এজাহার নামীয় অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
 

এমএসি/আরএইচ