খাবার নয়, ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়ানো হচ্ছে আফগান শিশুদের

শনিবার ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৩২


আফগানিস্তানে ক্ষুধার্ত শিশুদের মুখে খাবার নয় বরং ঘুমের ওষুধ তুলে দিচ্ছে তাদের বাবা-মা। এতে করে শিশুরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। এমনকি এসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও ভয়াবহ বলে জানান তারা। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না আফগানদের। অর্থের অভাবে অনেকে বিক্রি করে দিচ্ছে তাদের শরীরের অঙ্গ কিংবা নিজের কন্যা সন্তানকে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তাদের প্রতিবেদন বলছে, খাবার না থাকায় ক্ষুধার্ত শিশুদের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখছে তাদের বাবা-মা।
আফগানিস্তানের হেরাতের এক আশ্রয়কেন্দ্রে শিশুদের ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর বিষয় খুবই সাধারণ বলে জানায় বিবিসি। এসব ওষুধ মূলত নার্ভ শিথীল, বিষন্নতা ও উদ্বেগের মতো মনোরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এমন ওষুধ শিশুদের সেবন করানোর ক্ষেত্রে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। এতে করে ক্ষুধার্ত শিশুদের লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি মাথাঘোরা, ঝিমুনি এবং আচরণ অস্বাভাবিক হতে পারে বলে সতর্ক করছেন তারা। বিবিসি আরও জানিয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বেশিরভাগ পরিবার প্রতিদিন কয়েকটি রুটি সবাই মিলে ভাগ করে খায়। অনেক সময় শুকনো রুটি নরম করার জন্য সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ দেশটিতে মানবিক বিপর্যয়ের শুরু বলে মন্তব্য করেছে। তালেবান ক্ষমতায় আসার পরই মানবাধিকারের নানা ইস্যুতে আটকে দেয়া হয় দেশটির জন্য বরাদ্দ বিদেশি তহবিল। এতে দীর্ঘদিন বিদেশি সহায়তায় নির্ভর করা আফগানিস্তানের দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বিপদে পড়ে। জাতিসংঘ বলছে, আফগানিস্তানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খাবার কেনার অর্থ জোগাতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, এমনকি নিজের সন্তানকেও বিক্রি করছে অনেক পরিবার। খরা, বন্যা আর ভূমিকম্পে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় শীত মৌসুমে তীব্য খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর দেশটির জন্য বরাদ্দ বিদেশি তহবিল আটকে রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

এমএসি/আরএইচ