'কোন জাতীয় সরকার বাংলার জনগণ মেনে নেবে না' 

শনিবার ২১ মে ২০২২ ২০:১৪


:: মীর্জা অপু, পাবনা প্রতিনিধি ::
 
শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সংবিধানের বাইরে‌‌ কোন 'জাতীয় সরকার' বাংলার জনগণ মেনে নেবে না। বাংলার জনগণ সেই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 
 
শনিবার (২১ মে) দুপুরে আমিনপুর ফুটবল মাঠ প্রাঙ্গনে পাবনার আমিনপুর থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন। 
 
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি ইঙ্গিত করে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, একজন ডাক্তার একটি জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছেন।‌ জাতীয় সরকারের কে প্রধানমন্ত্রী হবেন আর কে মন্ত্রী হবেন সব নাম প্রকাশ করেছেন। আসলে কুঁজো মানুষ চিৎ হয়ে শোয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এক দলের এক নেতা- যারা আমাদের একটা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে নির্বাচন করে পারবেন না অথচ তারা জাতীয় সরকারের স্বপ্ন দেখছেন। কোন সাংবিধানিক সরকার ছাড়া কোনো জাতীয় সরকার আমরা মেনে নেব না। বাংলার মানুষ নিষ্ঠুরভাবে প্রত্যাখান করবে।' 
 
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সময় আর বেশি নাই। আগামী ২৪ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থী দিবেন সেই প্রার্থী পিছনে আপনার ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। যদি না করেন তাহলে আপনাদের কপালে দুঃখ। শেখ হাসিনা থাকলে দারিদ্র্য এবং বঞ্চনা মুক্ত বাংলাদেশ হবে। অন্য কোন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে আসবে- তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তা হতে দেবে না। 
 
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, কথায় কথায় মির্জা ফখরুল সাহেব টাকা পাচারের কথা বলেন দুর্নীতির কথা বলেন। অথচ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছিল। তাদের নেতা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিশ্বের শীর্ষ তিনটি দুর্নীতিবাজ পরিবারের মধ্যে জিয়া পরিবার একটি।‌ এরপরও দুর্নীতি, টাকা পাচার নিয়ে তাদের কথা বলতে লজ্জা করে না। 
 
তিনি বলেন, তাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করতে পারবে না, করলেও সাধারণ মানুষ সেই সেতু দিয়ে চলাচল করবে না। আমাদের নেত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো এরকম প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়। আগামী জুন মাসেই এই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। 
 
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, করোনার কারণে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। সেই কারণে আমাদের দেশেও তেলের দাম কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই সুযোগ নিয়ে আজকে যারা নির্বাচন চায় না তারা মাঠে নামবে। একটি দল এইসব বাহানা তুলে মাঠে নামতে চায়, নতুন করে চক্রান্তে মেতে উঠেছে তারা। তারা বলে ক্রয় ক্ষমতা মানুষের বাইরে চলে গেছে। অথচ প্রতিদিন যে হাজিরা পায় একজন শ্রমিক, তাতে ১০ কেজি চাল কিনতে পারে এবং আজকে দেশের যে অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে কৃষি কাজের জন্য লোক পাওয়া যায় না। 
 
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তারা বলে আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে! ঈদের পর দেখবেন এই সরকার আর নাই। যারা শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে চায় আমরা তাদেরকে বলি- বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাতারবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ, তাই কোন শক্তি নাই যে শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ক্ষমতা রাখে। এই দেশে নির্বাচন হবে এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকার দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন এবং নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন 
 
যদি মনে করেন এই নির্বাচনে আসবেন না। আর যদি মনে করেন আসবেন না কোন সমস্যা নাই। ২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে বাংলার মানুষ আবারও শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন। 
 
থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অনিল কুণ্ডু সাহার সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন 
 
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান উজ্জ্বল  প্রমুখ। 
 
সম্মেলনকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।  প্রথম বারে কারা আসছেন নেতৃত্বে- এমন আলোচনা চলছে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব অঞ্চলে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েই সবার আগ্রহ। সভাপতি পদে ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 
 
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে আমিনপুর থানার প্রতিষ্ঠিত হয়। থানা হওয়ার প্রায় ৮ বছর পর গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আমিনপুরকে সাংগঠনিক ইউনিট ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এরপরেই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটির গঠনের লক্ষ্যে থানা আ.লীগের আহবায়ক কমিটি করে জেলা আওয়ামী লীগ। সুজানগর উপজেলার ৩ টি এবং বেড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আমিনপুর থানা আওয়ামী লীগের এটি প্রথম সম্মেলন।
 

এমএসি/আরএইচ