আওয়ামী লীগ রাজপথে থেকে রাজনৈতিকভাবে কঠোর হাতে বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবেলা করবে - কৃষিমন্ত্রী

আব্দুল্লাহ্ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজপথে থেকে রাজনৈতিকভাবে কঠোর হাতে বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবেলা করবে। বিএনপিকে আন্দোলনের নামে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্ত পরিবেশ বিরাজমান রয়েছে। কোনমতেই বিএনপিকে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, গাড়িতে, ঘর-বাড়িতে আগুন ও জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারাসহ অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা করতে দেয়া হবে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অত্যন্ত সক্ষমতা অর্জন করেছে।

আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় আসায় বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত, ধর্মান্ধরা ভেতরে ভেতরে খুব উৎফুল্ল। সেখান থেকে টাকা আসবে, অস্ত্র আসবে। আর দেশে তারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে এই আশায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা শক্ত হাতে মোকাবেলা করবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দলের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে না গিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

রবিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, দুই বছরের মধ্যেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই দলকে আরো শক্তিশালী, সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সেজন্য অতিদ্রুত দলের জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী দিনেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দলের জন্য আগামী দিনের নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সেজন্য তরুণ ও শিক্ষিত মেধাবীদেরকে দলে বেশি করে সুযোগ দিতে হবে, তাদের হাতে দলকে তুলে দিতে হবে।

তরুণদের আওয়ামী লীগের আদর্শে উজ্জীবিত করতে হবে। একই সাথে, প্রবীণ ও অভিজ্ঞদের বুদ্ধি-পরামর্শ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত ১২ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সময়ে সকল ক্ষেত্রে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সারা পৃথিবীতে যা প্রশংসিত হচ্ছে। ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সঠিক পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ পেয়েছেন। কিন্তু উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রাকে বিএনপি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বাধাগ্রস্থ করতে চায়। তারা অতীতের মতো এখনো অপতৎপরতায় ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, নৈতিক শক্তির অধিকারী, দলের আদর্শের প্রতি অনুগত ও পরিক্ষীত নেতাকর্মীরাই আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন। সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এ নৌকা অত্যন্ত গর্বের, অহংকারের ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক। এটি পেতে হলে প্রার্থীকে নৈতিক শক্তির অধিকারী, দলের আদর্শের প্রতি অনুগত, ত্যাগী ও দীর্ঘদিনের পরিক্ষীত নেতাকর্মী হতে হবে। দলে হঠাৎ করে এসেই মনোনয়ন পাবেন না। একজন প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, তৃণমূলের সিদ্ধান্তসহ নানান দিক বিবেচনা করেই প্রার্থী মনোনয়ন করা হবে।

তারপরও কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, তৃণমূলের কর্মীবাহিনী ও তাদের ঐক্যই দলের সবচেয়ে বড় শক্তি। দলের গঠনতন্ত্র ও আইন মেনে শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ধর্মান্ধ ও অপশক্তির বিরুদ্ধে এখনও আমাদেরকে আন্দোলন করতে হয়। এখনও তারা আমাদেরকে, প্রগতিশীল আন্দোলনের মানুষ, বুদ্ধিজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে হত্যা করে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে না রাখতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে টিকে থাকা যাবে না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, রাজাকার-আলবদর ও ধর্মান্ধরা আবার দেশ দখল করবে।

এ সময় ধনবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর ফারুক আহমাদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এমএসি/আরএইচ