কুষ্টিয়ার পেঁয়াজ চাষীরা অধীক ফলনের আশাবাদী

বৃহস্পতিবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৭


:: মোঃ কামরুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ::

পেঁয়াজ লাগেনা এমন কোনো রান্না  কম দেখা যাই  মা বোনদের রাঁধুনির মূল কারিগর হলো পেঁয়াজ । আর এই পেঁয়াজ চাষ করতে ব্যাস্ত সময় পার করছে কুষ্টিয়ার পেঁয়াজ চাষীরা । কুষ্টিয়া  জেলায় তে এই বছর আনুমানিক ধারণা করা যাই ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক বেশি  চাষ করা হয়েছে।

এদিকে ভালো ফলনের আশায় খেতে পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের। জেলায় পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

পেঁয়াজচাষিরা বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পরিচর্যা করছি। গাছ ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া পেলে ভালো ফলন হবে। এবার সময়মতো বীজ পেয়েছি কৃষি অফিস থেকে। তাদের দিকনির্দেশনায় চারা ভালো হয়েছিল। সময়মতো চারা রোপণ করেছি।

জেলার দৌলতপুর, মিরপুর, কুমারখালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের ভালো ফলন করে ঘরে তোলার জন্য পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার চাষিরা। কাকডাকা ভোর থেকে উঠে দিনব্যাপী পেঁয়াজখেত আঁকড়ানো, নিড়ানো, সার ও স্প্রে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুষ্টিয়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি, সেখানে অর্জিত হয়েছে ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমি। এর মধ্যে পেঁয়াজ মূলকাটা ৩ হাজার ২৯৯ হেক্টর ও চারা রোপণ পেঁয়াজ ১০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় লালতীর কিং, মেটাল কিং, তাহেরপুরী, বারী পেঁয়াজ-১ ও কিংসুপার জাতের পেঁয়াজ কৃষকেরা রোপণ করেছে।

কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোত মোড়া গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম তিন বিঘা জমিতে চারা রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজখেত নিংড়ানো, সার বোনা ও স্প্রে করার কাজ চলছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের চেয়ে অর্ধেক খরচে পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারব। ভালো লাভবান হতে পারব।

দৌলতপুরের কৃষক সাইদুর রহমান দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, এ বছরে পেঁয়াজের চারার দাম কম। গতবারের চেয়ে এবার চাষে খরচ কমেছে। এবার বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। আশা করছি, ফলন ভালো হবে।

জেলার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজের প্রতি কেজি চারা গত বছর ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজের বীজ গত বছর খোলা ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা কমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকায়। এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদনে বীজ, চারা, সার, পরিচর্যাসহ খরচ হবে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকা। এ বছর লালতীর কিং এবং মেটাল কিং জাতীয় চারা বেশি রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘায় ৪৫ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়, যার বাজারমূল্য ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা হতে পারে।

কুষ্টিয়া জেলার কৃষি উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রমাণিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কৃষকদের অর্থকরী ফসলের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ। এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে উপযোগী। সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন জেলার কৃষি কর্মকর্তারা। গতবারের চেয়ে খরচ কম, অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো প্রণোদনার বীজ ও সার দেওয়া এবং লাভজনক হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষকরা এখন পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 
 

এমএসি/আরএইচ