জনবল সংকটে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল

সোমবার ১৭ জানুয়ারী ২০২২ ১১:৪১


লিমন মিয়া, ঝিনাইদহ:
জনবল সংকটে সেবায় বিঘ্ন ঘটছে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সামলাচ্ছেন মাত্র ২ জন স্টাফ নার্স। কয়েকজন ইন্টার্নশীপে থাকা শিক্ষানবিশ নার্স ডিউটি করলেও সময় মত কাঙ্খিত সেবা দিতে গিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে ঝামেলা বাড়ছে। রোগীর স্বজনরা তাদের সাথে হাসপাতাল স্টাফদের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করছেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, কলসাল্টেন্ট ডাঃ মো. আনারুল ইসলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছুটিতে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করছেন শিশু হাসপাতালের ডাঃ জামিল। তিনি সকালে একবার হাসপাতালে রাউন্ড দিয়ে চলে যান। রাতদিন ওয়ার্ড সামলাচ্ছেন ২ জন স্টাফ নার্স।

জানুয়ারি মাসে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হয়েছে ২৮৯টি শিশু। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছে ৬২ জন। জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত ভর্তি হওয়ার পরে হাসপাতালে ৮টি শিশু মৃত্যু বরণ করেছে। এর মধ্যে ১ জন সিভিআর নিউমোনিয়া,১ জন হার্ট ডিজিস ও বাকি ৬ জন সময়ের আগে জন্মগ্রহণ সংক্রান্ত কারণে মারা গেছে।

তবে বর্তমানে ডায়রিয়ার প্রকোপ কম থাকাতে দুয়েকজন রোগী আসলেও চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছে। ওয়ার্ড ইনচার্জ রাজিয়া সুলতানা জানান, আমরা মাত্র ২ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছি। ডায়রিয়া বা অন্য জটিল রোগী যদি একই সাথে ভর্তি থাকে সেই ক্ষেত্রে মাত্র দুইজনে কাকে রেখে কাকে আগে চিকিৎসা দেব।

এই কারণে রোগীর স্বজনরা আমাদের স্টাফ রুমে এসে চিৎকার চেঁচামেচি করে। আমরাও হয়তো উত্তেজিত হয়ে তাদের সাথে কথা বলি।

হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক নার্স রয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। সরকারের নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে আমরা এই স্টাফ দিয়েই কাজ চালাচ্ছি।

অতিরিক্ত পরিশ্রম করে উত্তেজিত হয়ে যায় তারাও। তাড়াতাড়ি নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সকল ওয়ার্ড সঠিক নিয়মে পরিচালনা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। সঠিক নিয়মে ওয়ার্ড পরিচালনা করতে হলে এই ওয়ার্ডে ৭ জন নার্স ও ৫ জন পরিছন্নতা কর্মী প্রয়োজন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

শিশু ওয়ার্ডে থাকা এক শিশু রোগীর বাবা বলেন, হাসপাতালে আমার নবজাতক মেয়েকে ভর্তি করেছি। হাসপাতালের পরিছন্নতা কর্মীরা এমন ব্যবহার করছেন যা ভাষায় বলার মত না।

এমএসি/আরএইচ