পৃথিবী বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

সোমবার ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৩


:: সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ::

আগামী প্রজন্ম ও পৃথিবী বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ও ভূয়া প্রযুক্তিতে জেরা'র বিনিয়োগ বন্ধেী দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন স্বদেশ-সাতক্ষীরা, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলোজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডবি-উজিইডি)’র উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও জনসমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

রবিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে `আগামী প্রজন্ম ও পৃথিবী বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ও ভূয়া প্রযুক্তিতে জেরার বিনিয়োগ বন্ধ করো শীর্ষক সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এড. আজাদ হোসেন বেলাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, প্রফেসর মোজাম্মেল হোসেন,ভূমিহীন নেতা আবদুস সামাদ, মানবাধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, উন্নয়নকর্মী সরদার গিয়াস উদ্দীন, শ্যামল কুমার বিশ্বাস, মানবাধিকারকর্মী সাকিবুর রহমান বাবলা, দলিত নেতা গৌরপদ দাস, সাংবাদিক ফারুক রহমান, মেহেদী আলী সুজয়, যুব অধিকারকর্মী ও তরুণ রাজনৈতিক কর্মী রুবেল হোসেন, যুবনেতা এস এম হাবিবুল হাসান প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন,জাপানের দুই জ্বালানি মোঘল, টোকিও ইলেকট্রিক কোম্পানি (টেপকো) ও চুবু ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (চেপকো)’র সমান অংশীদারিত্বে ২০১৫ সালে জেরা (ঔঊজঅ) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার মাত্র আট বছরের মধ্যে কোম্পানিটির বিদুুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬৭ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছে গেছে। বর্তমান পৃথিবীর সব থেকে বড় জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানি গুলোর মধ্যে জেরা অন্যতম। (নতুন যুগের জাপানি জ্বালানি) শ্লোগান দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও শুরু করলে ও জীবাশ্ম জ্বালানিতে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে এটি ‘ডাইনোসর যুগের জ্বালানি কোাম্পানি ’ হিসেবে পরিচিত হচ্ছে ।

বাংলাদেশে এলএনজি টার্মি নাল এবং জীবাশ্ম গ্যাস, এলএনজি ও ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জেজা’র ৪৮ কোটি ডলার বিনিয়োগ আছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, জার্মানি, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জেরা’র বিনিয়োগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ প্রতিবছর গড়ে ২৪ শতাংশ হারে বাড়লে ও জেরা’র বিনিয়োগ উল্টোদিকে বাড়ছে। এছাড়া সিসিএস প্রযুক্তি কার্বন নির্গমন কমাতে পারবে, পৃথিবীতে এমন কোনো উদাহরণ এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ কারণেই যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশও জাপানের কাছ থেকে এ ধরনের প্রযুক্তি নিতে রাজি হয়নি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা, সাধারণ নাগরিকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য, আমরা সরকার ও জ্বালানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বিশেষত জেরা’র নিকট আমাদের দাবিসমূহ:

১. জীবাশ্ম জ্বালানি, বিশেষত এলএনজি অবকাঠামে থেকে সকল বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে হবে;

২. নির্মাণাধীন ও প্রস্তাবিত সকল জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক প্রকল্প বাতিল করতে হবে;

৩. আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়ন করার জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে;

৪. পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ বাবদ গ্রিণহাউস গ্যাস নির্গমনের মূল্য পরিশোধ করতে হবে; এবং

৫. জেরা’র জ্বালানি প্রকল্প দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনসাধারণকে ক্ষতিপূূরণ দিতে হবে।

এমএসি/আরএইচ