৩৫/১ পোল্ডারের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা

শুক্রবার ২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:২৭


:: শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ::

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলায় ৩৫/১ পোল্ডারের মূল বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলেও উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তরের আগেই ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ১৮ অক্টোবর সকাল থেকে শুরু হয়ে দেড় কিলোমিটার ভাঙন শেষ হওয়ার পর পনুরায় ১৯ অক্টোবর আবারো মূল বেরিবাঁধের প্রায় ১০০ মিটার দেবে গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারী কয়েক হাজার পরিবার।

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে বেরিবাঁধ নির্মান প্রকল্পের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সিআইপি প্রজেক্টের ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেছেন। ভাঙ্গন কবলিত আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।

অন্যদিকে, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার আধা কিলোমিটারের মধ্যে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র দীঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় ওই এলাকায় গভীরতার সৃষ্টি হওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা এলাকার কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা গ্রামের কিচলু তালুকদার ও সেলিম বয়াতি ড্রেজার দিয়ে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বলেশ্বর নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।

বেরিবাঁধ নির্মানকাজ শুরু থেকেই এলাকাবাসী সহ মানুষের মূল দাবী ছিল আগে নদী শাসন ব্যবস্থা পরে বাঁধ নির্মান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই দাবী উপেক্ষা করে নদী শাসন ব্যবস্থা না করেই মাটির পরিবর্তে বালু ব্যবহার করায় বাঁধ নির্মান চলাকালীন সময়ে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলার আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হলে কয়েক হাজার হেক্টর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্বাবধায়নে মূল বেরিবাধের পূর্ব পাশে রিং বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্ত চলমান ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে তাও প্রায় বিলিন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য জাকির হাওলাদার বলেন, জিও ব্যাগ ফেলায় ভাঙ্গন রোধ হতে পারে তাও স্বল্প সময়ের জন্য। তবে, বগি থেকে উত্তর সাউথখালী পর্যন্ত নদী শাসন ব্যবস্থা না করলে অন্য যেকোনো যায়গা থেকে আবারও ভাঙ্গন শুরু হবার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম শামিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে বলেন, তিনি ইতোমধ্যে বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছেন। এছাড়া যে কাজ শুরু হয়েছে তাতে ভাঙ্গন কিছুটা কমলেও আরও ব্যাপক আকারে পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

বেরিবাঁধ নির্মান প্রকল্পের খুলনা বিভাগীয় কনসালটেন্ট সুপারভিশন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক ভাঙ্গন কবলিত এলাকার জিওব্যাগ ফেলানো শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে ব্যাপক আকারে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে। 

এমএসি/আরএইচ