মহম্মাদপুরে পরিক্ষামূলক কালো ধানের চাষ, সোনালী সপ্ন দেখছে কৃষক
বৃহস্পতিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:২১
:: মেহেদী হাসান রাব্বী, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি ::
এই প্রথম পরিক্ষামুলক মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের আদর্শ কৃষক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ লিটন কালো চালের ধান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কৃষক লিটন অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত দামি এই ধান চাষ করেছেন ৬৫ শতক জমিতে। নতুন প্রজাতির এসব ধান দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করছে তার জমিতে। ব্ল্যাক রাইস চাষাবাদ অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই। এতে কোনো অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না আলাদা কোনো পরিচর্যার।
অনেক দামি ও দুর্লভ এই চালের ধান রোপণ করে কৃষকেরাও অর্থনৈতিকভাবে প্রচুর লাভবান হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ।
সম্প্রতি রাজাপুর ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা গ্রামে ডায়াবেটিস প্রতিরোধমূলক নতুন কালো ধান ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সোবহান, রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বিশ্বাস, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস সাত্তার, রাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ শাকিল।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিজ অর্থায়নে উপজেলার পাঁচ জন আর্দশ কৃষককে ৫ কেজি করে কালো ধানের বীজ প্রদান করা হয়। উপজেলায় এক হেক্টরে প্রায় আট বিঘা জমিতে পরিক্ষামুলক এই কালো ধানের চাষ করা হয়েছে। সফল চাষ হলে কৃষি অঙ্গনে দেখা দেবে ব্যাপক সম্ভাবনা। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পেরে বেশ উৎফুল্ল কৃষক।
কৃষক লিটন বলেন, 'প্রথমে ইউটিউব দেখে কালো ধান সম্পর্কে জানতে পেরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করি। শুরু থেকেই কৃষি কর্মকর্তারা ফসলের তদারকিসহ আমাকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী মৌসুমে বড় পরিসরে চাষ করে এ মূল্যবান ধানের জাত দেশের কৃষকের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হবে।'
বিনোদপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কালো ধান চাষি কৃষক মাসুদ শেখ জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে সহযোগিতায় ৩৩ শতক জমিতে কালো ধান চাষ করেছি। এই চালে বিভিন্ন ওষুধ গুন রয়েছে। শুনেছি এ চাল নাকি ক্যান্সারকে দূরে রাখে।
কালো ধানের গুণাগুণ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূলত এসব জাতের ধানের রঙ সোনালি বা কালচে হয়। তবে চাল একেবারে কুচকুচে কালো। কালো চালে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। কালো ধানে ডায়াবেটিস প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে। এ চাল অনেক উপকারী। পুষ্টিসমৃদ্ধ এ চাল কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
এমএসি/আরএইচ