অপরিচ্ছন্ন বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল

মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারী ২০২৩ ১০:২১


জুলহাস আহমেদ, বরগুনা:
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবন টি হাসপাতাল না বলে ভাগারখানা বলাই উত্তম হবে বলে মনে করেন রোগীদের পাশাপাশি বরগুনার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও। ব্যবহার বিধি না মেনে যত্রতত্র কফ, পানের পিক, থুথু ফেলে হাসপাতালটির পরিবেশ দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। রোগীর সাথে আসা এটেনডেন্টরা মানছে না হাসপাতালের নিয়মকানুন। যত্রতত্র ময়লা ফেলে পুরো হাসপাতালটির পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
সরেজমিনে গুরে দেখা যায়, বরগুনার একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেল চরম বিশৃঙ্খলা পরিবেশ। নীচতলা থেকে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়ি, জানালার গ্রিল, দেয়াল এতোটাই অপরিচ্ছন্ন যে গাঁ ঘিনঘিন করে ওঠে। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে কোনাকাঞ্চিতে যত্রতত্র কফ, পানের পিক, ময়লা ও মরচের আস্তরণ। নীচ তলায় দুটি টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী টয়লেট দুটি সিটকানিবিহীন এখানের সব টয়লেট দুর্গন্ধে ঠাসা ।  দ্বিতীয় তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে প্রায় ২০০ এর মতো রোগী ও স্বজনদের জন্য একটি টয়লেট ও মহিলা ওয়ার্ডে ও একই অবস্থা। টয়লেটের মাথার উপর স্যানিটারি পাইপ ফেটে টুপুর টুপুর পানি পড়ছে। এইপানি পার হয়ে টয়লেটে ঢুকতে হয় রোগীদের।
রোগীদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে মোট চারটি  টয়লেট রয়েছে প্রায় ৩০০ রোগী ও তাদের স্বজনদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। বেড নেই, এই শীতে ফ্লোরিং করতে হচ্ছে বেশিরভাগ রোগীদের। স্বজনদের দাবি, এখানের পরিবেশ এখন এমনই যে সুস্থ মানুষই আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছি এখানে এসে। তাহলে অসুস্থদের কি অবস্থা ভাবুনতো?
জানাযায়, বরগুনা সদর হাসপাতালে ২৫০ শয্যা সাততলা ভবন তৈরি হয়েছে চার বছর আগে কিন্তু জনবল সংকটের কারণে এখনো উদ্বোধন হয়নি। জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ না করায় ২৫০ শয্যার সেবা চালু করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু বিদ্যমান ১০০ শয্যার জনবলকাঠামো অনুযায়ীই এখানে চিকিৎসক নেই। এ কারণে এখানে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া এখানে শয্যার চেয়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হন। ফলে অনেক রোগীকে মেঝে অথবা বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বরগুনা সামাজিক আন্দোলনের নেতা হাসান জন্টু বলেন, এই হাসপাতাল আমাদের বরগুনার একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র বলে আর বিশ্বাসই হয় না। দিন যত যাচ্ছে ততই এর শুধু অবনতিই ঘটছে। তিনি আরও বলেন, কঠোর প্রশাসক এবং দক্ষ জনবলের অভাবে এই বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। 
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহরাব উদ্দিন খান বলেন,আমাদের হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটের কারণে সবকিছু সামলানো সম্ভব নয়।নতুন ভবন চালুর বিষয় জানতে চাইলে বলেন,আমাদের জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে আমরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাটি ব্যবহার করতে পারছি না। ইতিমধ্যে আমরা নতুন ভবনের বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরু করেছি।

এমএসি/আরএইচ